জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে রাজনীতিতে ততো উত্তাপ ছড়াচ্ছে। আজ শুক্রবার (২৮ জুলাই) আর কয়েক ঘণ্টা পরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বড় দুই দলের রাজনৈতিক সমাবেশ। বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে মহাসমাবেশ। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে শান্তি সমাবেশ। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দুই দলের বৃহৎ এই সমাবেশের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পূর্বে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সামাজিক মাধ্যম টুইটারে টুইট করেছে মার্কিন কংগ্রেসম্যান বব গুড।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য মন্তব্য করে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এ টুইট করেন তিনি।
বব গুড লিখেছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর বাংলাদেশ সরকারের পরিচালিত সহিংসতায় উদ্বেগ জানিয়ে তিনিসহ আরও ১৩ জন কংগ্রেস সদস্য জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ভার্জিনিয়ার কংগ্রেস সদস্য বব গুড এর আগেও বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি মার্কিন কংগ্রেসের ছয়জন সদস্য গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সে সুযোগ সৃষ্টির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তাঁরা। চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করা হয়েছিল।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘দেশ এগিয়ে চলছে’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসব শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সাংবাদিকদের কারণে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা অতিরিক্ত সক্রিয় এবং বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিষয়েও মাতব্বরি করেন বলে অভিযোগ করেছেন । তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কথা বলা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়ে গেছে। এটা বন্ধ করা উচিত। এখন সময় এসেছে এটা বন্ধ করার।
এর আগে, বুধবার (২৬ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন : রাষ্ট্রদূতদের সক্রিয়তার জন্য সাংবাদিকদের দুষলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল রাষ্ট্র হলেও ২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন অনিয়ম, সহিংসতা ও ভয়ভীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারের কিছু পদক্ষেপের কথাও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সরকারের পদক্ষেপের কারণে বিরোধী রাজনৈতিক, বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে।
এদিকে, আজ শুক্রবার বিকালে ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশ ২৩ শর্তে নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়।
এর আগে গত ১২ জুলাই বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো যুগপৎভাবে এক দফার ঘোষণা দেয়। এই একদফার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান।
মন্তব্য করুন