যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ও ক্ষেত্রসমূহে যুক্ত হতে বা পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
বুধবার (২১ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রশ্ন করা হয়, ইতোমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছেন। এই সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে অজিত দোভাল বলেছিলেন যে, প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে যা ভারতের জাতীয় স্বার্থের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় দৈনিক তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে এমন কিছু করা উচিত নয় যুক্তরাষ্ট্রের। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার শাসনামলে ১০ ট্রাক সামরিক গ্রেডের অস্ত্র আসামের সন্ত্রাসী সংগঠন উলফার কাছে পাচারের কথা ছিল এবং এটিই ছিল নিরাপত্তার মূল বিষয়। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য বলেন।
প্যাটেল বলেন, আপনার প্রশ্নটা আসলে কি?
তখন প্রশ্নে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন কিছু করা উচিত নয় যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে।
জবাবে প্যাটেল বলেন, আমি দুটি বিষয় বলব। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ও ক্ষেত্রসমূহে যুক্ত হতে এবং পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। তবে তিনি এ কথাও বলেন যে, বিষয়টি যেহেতু ওই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেক্ষেত্রে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। একটি উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকা বজায় রাখতে ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমরা যৌথভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করি এবং উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও অভিঘাত সহনশীল বিশ্ব ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ) প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই আমরা।
এরপর প্রশ্ন করা হয়, নরেন্দ্র মোদির মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে ৫৭ জন কংগ্রেসম্যান এবং ১৮ জন সিনেটর প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন। তিনি (মোদি) মুসলমানদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, বিশেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, সে বিষয়ে তারা লিখেছেন। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে এ নিয়ে কখনো নিন্দা জানাতে শুনিনি।
জবাবে প্যাটেল বলেন, আমরা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছি। তারাও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা নিয়মিতভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা, বিশ্বাসের স্বাধীনতাসহ আমাদের মানবাধিকার-সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে উচ্চপর্যায়ে কথা বলি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাভাবিক অংশীদার হিসেবে একটি সুরক্ষিত, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও বহুত্ববাদী ভারতের কথা ভাবনায় রাখি। ভারতীয় অংশীদাররাও এমন কিছু দেখেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়, মোদির বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র সফরটি কীভাবে অতীতের সফরগুলোর চেয়ে ভিন্ন।
জবাবে প্যাটেল বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় সফর। তাই আগের দ্বিপক্ষীয় সফরগুলোর চেয়ে এই সফর একটু ভিন্ন। তবে সত্যিকার অর্থে, এই সফরকে অন্যান্য সফরের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। এটি ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও গভীর, প্রসারিত ও শক্তিশালী করার সফর।
মন্তব্য করুন