প্রশাসনের অভিযানের পরও রাঙ্গুনিয়ায় মহাসড়কের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না। এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তারা খণ্ড ও এককালীন সুবিধা গ্রহণ করায় একের পর এক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠছে। মার্কেট ও দোকান নির্মাণ করায় সংকুচিত হয়েছে মহাসড়ক। চলাচলে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। গত এক বছরে শতাধিক ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক হতাহত হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশের দুপাশে অভিযান চালিয়েও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হচ্ছে না। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কারণে কোটি কোটি টাকার সরকারি জায়গা দখলে চলে গেছে। এসব জমিতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে শত শত দোকানপাট। সরকারি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করে ভূমিদস্যুরা কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দখল হয়ে যাওয়া মহাসড়কের জায়গা উদ্ধারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কোনো উদ্যোগ না থাকায় দখলকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে এসব স্থাপনা ভেঙে দিলেও সময়-সুযোগ বুঝে আবারও এসব এলাকায় স্থাপনা রাতারাতি গড়ে উঠছে। মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকান ও মার্কেটগুলো থেকে মাঠপর্যায়ের এক শ্রেণির কর্মকর্তারা খণ্ড ও এককালীন সুবিধা গ্রহণ করছেন এমন অভিযোগ আছে। তবে সওজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছে। মূলত দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মাঠপর্যায়ের এসব প্রতিরোধে কর্মকর্তারা অসহায় বোধ করেন বলে দাবি করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ইছাখালি এলাকায় কাপ্তাই মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের বিপরীতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় বিশাল জায়গাজুড়ে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ চলছে। বছরখানেক আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে এসব স্থাপনা ভেঙে দেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাঙ্গুনিয়ার দায়িত্বশীল ব্যক্তি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের চট্টগ্রাম নগরী মোহরা নতুন রাস্তার মাথা থেকে কাপ্তাই জেটি ঘাট পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার মহাসড়কের দুপাশে প্রায় ৩০ ফুট চওড়া সরকারি খাস জায়গা রয়েছে। সড়কসহ ওই মূল্যবান জমি তদারকি করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিয়োজিত রয়েছে। বিগত সময়ে কাপ্তাই মহাসড়কের অধিকাংশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও বর্তমানে এক শ্রেণির স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে আবারও অবৈধভাবে দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করছে।
রাঙ্গুনিয়া রোয়াজার হাটের এক বাসিন্দা মো. রাশেদ বলেন, মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিএনজি গ্যারেজ, দোকান ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় পথচারী চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এতে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইউনুছ বলেন, ইছাখালিতে অভিযানের পর আবার স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি জেনেছি। শুধু ইছাখালি নয়, কাপ্তাই মহাসড়কের সব জায়গায় নির্মাণাধীন এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হবে।