উজানি বৃষ্টি ঢলে আমার সমতল বুকে তখন উত্তাল বান ডাকে,
কতটা ভেঙে এসেছে সে ঢেউ,
কত ফসলি জমি, সম্ভাবনার অঙ্কুর সমূলে গিয়েছে ভেসে,
বুক ছিঁড়ে ঝিনুক তোলা হাহাকার,পাহাড় পারে না ডিঙ্গাতে-
সুনীল নিস্তব্ধতায় নির্লিপ্তের চাহনি মেখে রয়!
ভেসে যাই, ভেসে রই, যেন বেঁচে রই এক টুকরো খড়ের আকুতি বুকে চেপে!.
অবশেষে, কোন দূর নক্ষত্র থেকে তুমি এলে
লতানো কচি লাউয়ের ডগার মতো দুটি বাহু,
গোলাপের পাপড়ির রং ঠোঁটে মেখে-
অপার মায়ার সাগর মুখে দেখে প্রাণ জুড়ালো যেন!
এইরূপ মায়ায় এই মুখ ভালোবেসে-
আমার স্বপ্ন বাঁধি কতরূপে,
আমার রক্তের ধারা, হিজল ছায়ায় শান্ত নদীর মতো,
তোমার সকল ধারা জুড়ে বয়,
এই স্রোত আমার শক্তি, আমার প্রেরণা যতো
তোমারে আছে ঘিরে!.
বৈশাখের প্রথম বৃষ্টি তুমি, শেষ ঝরা পাতার পর,
নতুন কুশিতোলা সোনালু।
তুমি সৈকতজুড়ে চিতল আকাশে ডালি সাজানো সিঁদুর অংশুমান,
পাণ্ডুর মেঘে ছড়িয়ে দেয়া ঈষৎ লাল,
টোল পড়া সন্ধ্যায় ঝাউয়ের ডগায় দক্ষিণ শীতল হাওয়া তুমি,
নীল ঊর্মিমালী মাঝে উচ্ছল জলপরী-
নানা রঙে নানা বর্ণে উজ্জ্বল ঝর্ণা ধারা।.
শাশ্বত চঞ্চল হরিণীর ডাগর চোখের মোহন মায়া তুমি,
লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরের কৃষ্ণগহ্বর যেন,
কি নেশায় ভুবন টানে সেই সে কেন্দ্রে-
দুর্বার চৌম্বক ক্ষেত্র এক, আবেশের শেষে আগলে রাখো মনে।.
শ্যামল রেইন্ট্রির দীঘল সারি মেঠো পথ নিয়ে গেছে বেঁকে,
তুমি সেই শ্যামলীমায় বিছিয়েছ স্নিগ্ধ আলোকাবরণ,
পেলব তুমি, মেরুপ্রভায় রক্তিম সূর্যের দীপ্যমান আভা,
চেতনার গহন মায়ায়, আমার জ্যোতিষ্ময়ী পূর্ণাভা।.
[কবি উৎকলিত রহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী; বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশ’এর সঙ্গে কাজ করছেন।]
মন্তব্য করুন