টানা চার দিন দর পতনের পর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে আজ হঠাৎ বেড়েছে ডলারের দাম। এদিন বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে ৩১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার কিনেছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিলামের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার কেনার এ পদক্ষেপ বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষক ও ব্যাংকাররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, আজকের আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সর্বোচ্চ দর ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দর ছিল ১২০ টাকা ৮০ পয়সা। আর গড় দর ছিল ১২১ দশমিক ১১ টাকা। সোমবার (১৪ জুলাই) এই গড় দর ছিল ১১৯ দশমিক ৭১ টাকা, অর্থাৎ একদিনেই বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা।
সোমবার নিলামে ২২টি ব্যাংকের কাছ থেকে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার দর ধরা হয়েছে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। এর আগে রোববার (১৩ জুলাই) অনুষ্ঠিত প্রথম নিলামে একই দরে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়েছিল। এই দুই দফা নিলামে মোট ৩০ কোটি ৪০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা সাম্প্রতিক সময়ে বাজার হস্তক্ষেপে বড় উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান কালবেলাকে বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে দাম কম ছিল। রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় বাজারমূল্য ধরে রাখতে নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও বাজার থেকে ডলার কেনা হবে, যেন বাজারে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ডলার সংকট সামাল দিতে গত তিন অর্থবছরে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থেকে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ডলার বিক্রি বন্ধ করেন নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। একই সঙ্গে অর্থ পাচার বন্ধে তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ নেন। এ ছাড়া আমদানি কমে যাওয়া, এলসি খোলার হার হ্রাস এবং প্রবাসী আয় ও রপ্তানি প্রবাহ বাড়ার ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এতে অনেক ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ডলার জমা হয়ে যায়। এজন্য ব্যাংকগুলোও ডলার বিক্রির উদ্যোগ নেয়। এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এখন বাজার থেকে ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকারদের মতে, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতির একটি বড় কারণ। গত সপ্তাহে ডলারের দাম প্রায় ২ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত কমে গিয়েছিল। আজকের দাম বাড়ার ঘটনাকে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারসাম্য রক্ষার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
মন্তব্য করুন