বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সবশেষ বৈশ্বিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সূচক ফিনডেক্স অনুযায়ী ২০২৪ সালে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট বা হিসাব থাকার হার ৪৩ শতাংশ। তিন বছর আগে এ হার ছিল ৫৩ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ফিনডেক্স রিপোর্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির চিত্র তুলে ধরে। রিপোর্টে প্রাপ্তবয়স্করা কীভাবে অর্থ সঞ্চয় করে, ঋণ নেয়, অর্থ প্রদান করে এবং আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলা করে তার ওপর পর্যালোচনা করা হয়। বিশ্বব্যাংক বৃহস্পতিবার ফিনডেক্স রিপোর্ট-২০২৫ প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে ১৪১টি দেশের তথ্য রয়েছে।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বৈশ্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বিশ্বে আর্থিক সেবায় হিসাব থাকার হার ৭৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৯ শতাংশ হয়েছে। তবে বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে অ্যাকাউন্ট থাকার হার বেশি। ভারতের হার ৮৯ শতাংশ, যা এ অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে শুধু ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট থাকার হার ২৪ শতাংশ থেকে কমে ২৩ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংক ও এমএফএস হিসাব একই সঙ্গে রয়েছে ১০ শতাংশের। মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের অ্যাকাউন্ট থাকার হার ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হয়েছে।
তবে বাংলাদেশে নারী ও পুরুষের অ্যাকাউন্ট থাকার পার্থক্য কিছুটা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ‘জেন্ডার গ্যাপ’ দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশ। ২০২১ সালে যা ছিল ১৯ শতাংশীয় পয়েন্ট। ২০২৪ সালে নারীদের মধ্যে অ্যাকাউন্ট খোলার হার ৩৩ শতাংশ এবং পুরুষের ৫৪ শতাংশ। ২০২১ সালে যা ছিল যথাক্রমে ৪৪ শতাংশ এবং ৬৩ শতাংশ। ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নারীদের হার ২৭ শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষের হার ৪৫ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে আর্থিক সেবায় হিসাবের হার কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। তবে, ধারণা করা হচ্ছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে অ্যাকাউন্ট কমে যাওয়া এর কারণ হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ডিসেম্বরে এমএফএসে নিবন্ধিত অ্যাকাউন্ট দেখানো হয় ১৬ কোটি ৯৭ লাখ। তবে বর্তমানে এই হিসাব সংখ্যা নেমেছে ১৪ কোটি ৫০ লাখে।
মন্তব্য করুন