চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আবারও হাতি আতঙ্কে রাত কাটছে পাঁচ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। বুধবার (৫ জুলাই) রাতে উপজেলার উত্তর হাজিগাঁও এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে ছাবের আহমদ রেনু (৭৮) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পর এ আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
গত ছয় বছরে দেয়াং পাহাড়ে অবস্থানরত এই তিনটি হাতির আক্রমের ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই হাতির ভয়ে এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা দেয়।
বন বিভাগ বলছে, নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণে খাবারের সন্ধানে হাতিগুলো লোকালয়ে চলে আসে।
জানা যায়, গত সাত বছর ধরে তিনটি হাতি বাঁশখালী পাহাড় থেকে এসে আনোয়ারার দেয়াং পাহাড়ে অবস্থান করে। দিনের বেলায় হাতিগুলো পাহাড়ে অবস্থান করলেও রাতে নেমে আসে লোকালয়ে। উপজেলার হাজিগাঁও, ঝিওরি, বটতলী, রাডার অফিস, কবিরের দোকান, মোহাম্মদ পুর, ফকিরখিল, বন্দর, গুয়াপঞ্জক, দেয়াংবাজার, বদলপুরা ও কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান এলাকায় লোকালয়ে এসে তাণ্ডব চালায়। হাতির আক্রমণে এ পর্যন্ত ১৩ জন নারী-পুরুষের মৃত্যু ঘটেছে, আহত হয়েছে শতাধিক। হাতির তাণ্ডবে মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার উপরে।
স্থানীয়রা জানায়, হাতি তাড়াতে বন বিভাগের কর্মী থাকলেও কয়েক বছর ধরে তাদের দেখা যায় না।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, বন বিভাগের কোন কর্মী এলাকায় আসে না। কেউ মারা গেলে কর্মকর্তারা দেখতে আসেন। কিছু টাকা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন। এখন আমরা এলাকাবাসী রাত জেগে বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছি।
ফকিরখিল এলাকার বাসিন্দা মো. ইদ্রীস বলেন, গত তিন দিন আগে আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে হাতির দল। বন বিভাগের কাউকে দেখি নাই।
বাঁশখালীর জলদি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও অভয়ারণ্য রেঞ্জের কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, খাবারের সন্ধানে হাতিগুলো দেয়াং পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসে। বিষয়টি স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য কয়েকটি টিম কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, বৃহস্পতিবার হাতির আক্রমণে নিহত ব্যক্তির পরিবারের কাছে গিয়েছি। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বন বিভাগের সঙ্গে বসব।
মন্তব্য করুন