বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

৪১ দিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গুলিবিদ্ধ শিশু রাতুল

হাসপাতালের বিছানায় শিশু রাতুল। ছবি : কালবেলা
হাসপাতালের বিছানায় শিশু রাতুল। ছবি : কালবেলা

বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিতে আহত হয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিশু জুনাইদ ইসলাম রাতুল। ৪১ দিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে শিশুটি।

এ পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ করেও কোনো আশা দেখছেন না তারা।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাতুল বেঁচে ফিরলেও চিরদিনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। বর্তমানে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে রাতুলের।

রাতুল বগুড়া উপশহরের পথ পাবলিক স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ওই এলাকার মুদি দোকানি জিয়াউর রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, ৫ আগস্ট সকালে নাশতা না করে মায়ের বারণ সত্ত্বেও রাতুল তার বোন বগুড়া মুজিবর রহমান মহিলা কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী জেরিন সুলতানা ও রাতুলের ভগ্নিপতি আমির হামজার সঙ্গে চলে যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। একসময় মিছিল নিয়ে তারা বগুড়া সদর থানার অদূরে ঝাউতলার কাছে পৌঁছায়। তখন বৈষম্যবিরোধী মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে আহত হয় রাতুল।

রাতুলের বড়বোন জেরিন জানান, তার পাশেই ছিল রাতুল। হঠাৎ রাতুলের মাথায় ৪টি ছররা গুলি লাগে। এরমধ্যে একটি গুলি রাতুলের বাম চোখের মধ্য দিয়ে মাথায় ঢুকে যায়। এরপর আরও অসংখ্য গুলি লাগে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। অজ্ঞান অবস্থায় তার বোন জেরিন ও তার ভগ্নিপতি তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতলে নিতে বলেন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পর তার মাথায় অস্ত্রপচার করা হয়। মগজের ভেতর থেকে একটি গুলি বের করেন চিকিৎসকরা।

ভগ্নিপতি হামজা জানান, রাতুলের জন্যে কৃত্রিমভাবে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ৪১ দিন ধরে অজ্ঞান হয়ে হাসপাতালের আইসিইউর বেডে শুয়ে থাকা জুনায়েদ ইসলাম রাতুল একটি কথাও বলেনি।

রাতুলের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, এক্সরে রিপোর্টে ছেলের মাথা, চোখসহ শরীরে শতাধিক গুলি পেয়েছেন চিকিৎসকরা। চোখ ভেদ করে গেছে গুলি। এ পর্যন্ত ৩৬টি গুলি অপসারণ করেছে। চিকিৎসকরাই বলেছেন, রাতুল বেঁচে ফিরলেও চিরদিনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। ও আমার একমাত্র ছেলে। যন্ত্রণায় ছটফট করলে নিজেকে ধরে রাখতে পারি না।

তিনি বলেন, আমার সর্বস্ব বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছি। ঢাকায় দুজন লোকের থাকা, খাওয়া, গাড়ি ভাড়া, ছেলের ওষুধ-পথ্য সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে রাতুলের স্কুল কর্তৃপক্ষ আর্থিক সহায়তা করেছে। আরও দু-একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এগিয়ে এসেছে। যদিও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

একাত্তরের ইস্যুর সমাধান চাইল এনসিপি

রাজধানীতে তামাকের বিরুদ্ধে ‘ইয়ুথ মার্চ’

বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নারী-শিশুসহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

ত্রিবার্ষিক সম্মেলন / আবারো জামালপুর জেলা বিএনপির নেতৃত্বে শামীম-মামুন

দাবি আদায় ছাড়া ঘরে না ফেরার ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীর

লিডসের বিরুদ্ধে আর্সেনালের গোল উৎসব

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত: জোনায়েদ সাকি

এনসিপির কর্মকাণ্ডে ফিরছেন সারোয়ার তুষার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার 

সাংবাদিকের বাড়িতে চুরি, স্বর্ণালংকারসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

১০

৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ ও সবল বিপ্লব

১১

চেতনানাশক খাইয়ে দুধর্ষ ডাকাতি

১২

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ঘোষণা

১৩

প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে ছাত্রদলের নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা

১৪

নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে চাকরি খোয়ালেন বেরোবি সমন্বয়ক

১৫

হাওর ও চরাঞ্চলের শিক্ষক বদলির তদবির আসে ওপর থেকে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

১৬

জয় স্যুটকেস ভরে টাকা নিয়ে গেছে : সোহেল

১৭

২৫ বছর ধরে বাঁশির মায়ায় আটকে আছে শফিকুলের জীবন

১৮

একাত্তরেও আ.লীগ পালিয়েছে, এবারও পালিয়ে গেছে : টুকু

১৯

একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ধাপের আবেদন শুরু, শেষ হচ্ছে কবে

২০
X