ঝালকাঠি সদর উপজেলায় আলাউদ্দিন (৩২) নামের এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগে আটক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুহুল আমীন ওরফে সায়মন (২৮) কে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করলে জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাখাওয়াত জানান।
পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় জেলা পুলিশ লাইনসের কনস্টেবল আকরাম হোসেন বাদী হয়ে অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগ নেতা সায়মনকে আসামি করে পুলিশ অ্যাসল্ট, সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ৯টার দিকে শহরের প্রধান সড়কে ঝালকাঠি জেলা পরিষদের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণকাঠি এলাকা থেকে রুহুল আমীনকে আটক করা হয়।
আলাউদ্দিন জেলা পুলিশের যানবাহন শাখায় কর্মরত। তিনি শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে। পুলিশ সদস্য মো. আলাউদ্দিনকে আহত অবস্থায় প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ও পরে অবস্থা গুরুতর হলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ৯টার দিকে জেলা পরিষদের সামনে মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তির চায়ের দোকানে রুটি-সবজি খাচ্ছিলেন পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিন। খাবারে লবণ কম হওয়া নিয়ে চায়ের দোকানির সঙ্গে তর্কে জড়ান আলাউদ্দিন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতা রুহুল আমীন চায়ের দোকানির পক্ষ নেন। তখন পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিনের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা রুহুলের বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে রুহুল দোকানে থাকা একটি জ্বালানি কাঠ দিয়ে আলাউদ্দিনের মাথায় আঘাত করেন। এতে তার মাথা ফেটে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণকাঠি এলাকা থেকে রুহুল আমীনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ জানায়, তিনি সংগঠনিক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাই ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুহুল আমীন ওরফে সায়মনের আটকের প্রকৃত কারণ জানতে পারিনি। তবে এ ব্যাপারে মামলার কপি হাতে পেয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ঝালকাটি সদর থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, জেলা পুলিশ লাইনসের ২০ গজের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তকে রাতেই অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আফরুজুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপরাধী যে দলেরই হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
মন্তব্য করুন