সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
শহীদ নাজমুলের মায়ের আহাজারি

‘ট্যাকার অভাবে রোজাতে মাছ-গোশতও খাবার পামু না’

শহীদ ছেলের ছবি হাতে মা গোলেভান বেগম। ছবি : কালবেলা
শহীদ ছেলের ছবি হাতে মা গোলেভান বেগম। ছবি : কালবেলা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ যখন উত্তাল তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন নাজমুল মিয়া (২৫)। আর এই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। তার জীবনের মায়া ত্যাগে দেশে ফ্যাসিবাদের বিদায় ঘটলেও দুর্বিষহ জীবন কাটছে মা গোলেভান বেগমের।

চলতি রমজানে তার পেটে জুটছে না ভালো খাবার। চরম দারিদ্র্যের কষাঘাতে কোনোমতে খেয়ে রোজা পালন করছেন এই মা।

সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছেলেহারা শোক আর সংসার চালানোর চিন্তায় যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে গোলেভানের। কান্নায় মুহূর্তে মুহূর্তে মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। কোনো ক্রমেই থামছিল না এই মায়ের আর্তনাদ।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শহীদ নাজমুল হোসেনের মা বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। কোনো জমিজিরাত নাই। ইসকাওয়ালা সোয়ামি মেলাদিন হলো মরে গেছে। হামার ঘরে একটায় বেটা নাজমুল। বিয়ে না করে গার্মেন্টেসের চাকরি নিয়ে হামাক পালছিল। এরপর মানসের সাতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন যায়্যা হামার বেটা বন্দুকের গুলিখায়্যা মরচে। একন এ্যালা হামি সংসার চালাবার পারতিছিনা বাহে। ট্যাকার অভাবে এই অজাত (রোজা) মাছ-গোশতও খাবার পামু না। শুনছিলাম সরকার নাকি হামাক ট্যাকা দিবি। যদি দিলো হয় তাহলে মোর এ্যানা কষ্ট ঘুচলো হয় বাবা।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজমুল মিয়া। তার রিকশাচালক বাবা হামিদুল ইসলাম হাইদুল প্রায় দুই বছর আগে মারা গেছেন। সেই থেকে মা গোলেভান বেগম সংসার চালাতে হিমশিম খান। এ পরিস্থিতিতে সংসারের হাল ধরেন নাজমুল। জীবিকার তাগিদে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার সিয়াম গার্মেন্টেসে চাকরি করছিলেন নাজমুল মিয়া। সারা দেশ যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল, তখন নাজমুল মিয়াও এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

এরই মধ্যে গত ৪ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন। সেই গুলি ঢোকে পেটের ভেতর। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট সন্ধ্যার পর মারা যায় নাজমুল।

এরপর ধারদেনা করে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সেখানে ১০ আগস্ট সকালে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এরপর গেল ফেব্রুয়ারি মাসে সেই কবর থেকে নাজমুলের লাশ উত্তোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয় প্রশাসন। এ সময় স্থানীয়দের বাধার মুখে লাশ তুলতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেসিকে নয়, আর্জেন্টাইন লিগে নেইমারকেই চান ডি মারিয়া

সাবিলা নূর কেন চুপ ছিলেন?

এক যুগ পর বাড়ি ফিরলেন ওমান ফেরত মানসিক ভারসাম্যহীন সুমন

এইডস রোগীদের বাঁচাতে টিকা আনছে রাশিয়া

বিদেশি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের মার্কিন ভিসা নিয়ে দুঃসংবাদ

পরিচালক নয়, সভাপতি হয়েই বিসিবিতে ফিরতে চান তামিম

তিশাকে কোলে তুলতে গিয়ে হাত ভেঙেছিল: তৌসিফ মাহবুব

ডিআরইউতে লতিফ সিদ্দিকীসহ আ.লীগের নেতাকর্মী অবরুদ্ধ

আগারগাঁও মোড়ে শিক্ষার্থীদের ব্লকেড, যান চলাচল বন্ধ

আবাসিক হোটেল থেকে পুরুষ সঙ্গীসহ টিকটকার মাহি আটক

১০

১২ ফুট লম্বা অজগর বস্তায় করে বাড়িতে নিয়ে গেল যুবক

১১

কত সম্পদের মালিক টেইলর-কেলসে?

১২

৪ কারণে ভেঙে দুই ভাগ হয়েছিল চট্টগ্রামের সেতুটি

১৩

পুলিশের পোশাকে থানায় গুরুদায়িত্বে বিড়াল!

১৪

নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পরও দলকে জেতাতে পারলেন না সাকিব

১৫

দলকে ফাইনালে তুলে যা বললেন মেসি

১৬

চাকরি দিচ্ছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, থাকছে না বয়সসীমা

১৭

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ উত্তেজিত জনতার

১৮

আবু সাইদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আজ

১৯

কেন নিজের ‘বিকিনি’ ছবির পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন শর্মিলা?

২০
X