বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
শহীদ নাজমুলের মায়ের আহাজারি

‘ট্যাকার অভাবে রোজাতে মাছ-গোশতও খাবার পামু না’

শহীদ ছেলের ছবি হাতে মা গোলেভান বেগম। ছবি : কালবেলা
শহীদ ছেলের ছবি হাতে মা গোলেভান বেগম। ছবি : কালবেলা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ যখন উত্তাল তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন নাজমুল মিয়া (২৫)। আর এই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। তার জীবনের মায়া ত্যাগে দেশে ফ্যাসিবাদের বিদায় ঘটলেও দুর্বিষহ জীবন কাটছে মা গোলেভান বেগমের।

চলতি রমজানে তার পেটে জুটছে না ভালো খাবার। চরম দারিদ্র্যের কষাঘাতে কোনোমতে খেয়ে রোজা পালন করছেন এই মা।

সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছেলেহারা শোক আর সংসার চালানোর চিন্তায় যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে গোলেভানের। কান্নায় মুহূর্তে মুহূর্তে মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। কোনো ক্রমেই থামছিল না এই মায়ের আর্তনাদ।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শহীদ নাজমুল হোসেনের মা বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। কোনো জমিজিরাত নাই। ইসকাওয়ালা সোয়ামি মেলাদিন হলো মরে গেছে। হামার ঘরে একটায় বেটা নাজমুল। বিয়ে না করে গার্মেন্টেসের চাকরি নিয়ে হামাক পালছিল। এরপর মানসের সাতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন যায়্যা হামার বেটা বন্দুকের গুলিখায়্যা মরচে। একন এ্যালা হামি সংসার চালাবার পারতিছিনা বাহে। ট্যাকার অভাবে এই অজাত (রোজা) মাছ-গোশতও খাবার পামু না। শুনছিলাম সরকার নাকি হামাক ট্যাকা দিবি। যদি দিলো হয় তাহলে মোর এ্যানা কষ্ট ঘুচলো হয় বাবা।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজমুল মিয়া। তার রিকশাচালক বাবা হামিদুল ইসলাম হাইদুল প্রায় দুই বছর আগে মারা গেছেন। সেই থেকে মা গোলেভান বেগম সংসার চালাতে হিমশিম খান। এ পরিস্থিতিতে সংসারের হাল ধরেন নাজমুল। জীবিকার তাগিদে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার সিয়াম গার্মেন্টেসে চাকরি করছিলেন নাজমুল মিয়া। সারা দেশ যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল, তখন নাজমুল মিয়াও এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

এরই মধ্যে গত ৪ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন। সেই গুলি ঢোকে পেটের ভেতর। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট সন্ধ্যার পর মারা যায় নাজমুল।

এরপর ধারদেনা করে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সেখানে ১০ আগস্ট সকালে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এরপর গেল ফেব্রুয়ারি মাসে সেই কবর থেকে নাজমুলের লাশ উত্তোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয় প্রশাসন। এ সময় স্থানীয়দের বাধার মুখে লাশ তুলতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রকৌশলীদের উন্নয়ন ও সংস্কার নিয়ে আইইবি’র মতবিনিময় সভা 

সৈয়দপুরে শাটল বাস সার্ভিস চালু করল বিমান

প্রকৌশলীদের অধিকার আদায়ে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সার্জেন্ট হেলালের সাহসিকতায় ২ ছিনতাইকারী আটক

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ‘মহান মে দিবস’ আজ

নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, প্রশাসনের সতর্কতা

রাজধানী থেকে পুরনো যানবাহন সরাতে অ্যাকশনে নামছে বিআরটিএ

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনওকে বদলি

ববি প্রশাসনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা

স্কুলের ১৮টি গাছ কাটলেন প্রধান শিক্ষক

১০

শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়েতে কুকুর, ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে চিঠি

১১

আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে কুপিয়ে হত্যা

১২

বাবরি মসজিদ বানাবেন পাকিস্তানি সেনারা : পাকিস্তানের সিনেটর

১৩

কাশ্মীর হামলার পর চাপে ভারতের মুসলিমরা, বেড়েছে দমনপীড়ন

১৪

ছাত্রদের ক্ষমতায় এনে দেশের ক্ষতি করা হয়েছে : সোহেল

১৫

সন্ধ্যা নদীতে বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৬

মে মাসে হতে পারে ২টি ঘূর্ণিঝড়

১৭

শ্রমিক সমাবেশে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান

১৮

ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা ইসরায়েলে

১৯

গ্রাহকদের জন্য বাড়তি সুবিধা আনল বাংলালিংক

২০
X