কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যুবদল নেতা মিরান হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যা জানা যাচ্ছে

মাগুরা জেলা যুবদলের সদস্য মুন্সী মিরান হোসেন। ছবি : সংগৃহীত
মাগুরা জেলা যুবদলের সদস্য মুন্সী মিরান হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

মাগুরার শ্রীপুরের নাকোল গ্রামের মল্লিকপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা, সাবেক ইউপি সদস্য জামিরুল ইসলাম। তার সময়ে মুসল্লিদের কাছ থেকে মসজিদ কমিটির তোলা টাকার কোনো হিসাব ছিল না। এ নিয়ে গত ৩০ মার্চ জামিরুল ইসলামের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন যুবদল নেতা মুন্সী মিরান হোসেন।

এর জের ধরে সেদিন রাতেই জামিরুলের নেতৃত্বে মিরানের ওপর হামলা করেন গত ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে যোগ দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বেধড়ক মারধর করা হয় মিরানকে। পরে গত শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে ঢাকার শ্যামলীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিরান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের আগে বিএনপির রাজনীতি করতেন জামিরুল। তবে ২০০৮ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে এলাকায় নিজের আধিপত্য নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় আ.লীগ নেতাদের সঙ্গে মিলে মুন্সী মিরান হোসেনকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতেন জামিরুল।

গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন জামিরুল। তবে এলাকার আ.লীগ নেতাকর্মীদের নিজ গ্রুপে যোগদান করিয়ে প্রভাব বিস্তারে আবারও বিএনপির রাজনীতি শুরু করেন জামিরুল। তবে শুরু থেকেই আ.লীগ নেতাকর্মীদের বিএনপিতে নিয়ে রাজনীতির বিরোধিতা করেন মিরান। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও তীব্রতর হয়।

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সদস্য জাহিদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মসজিদের টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্ব একটি অজুহাত। রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ায় মিরানকে শায়েস্তা করতে চাইছিলেন জামিরুল। সে কারণেই পরিকল্পিতভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুঃখজনক হচ্ছে, হামলার জন্য আ.লীগ নেতাকর্মীদের ডেকে আনা হয়েছে।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হাসান সোহান বলেন, স্থানীয় রাজনীতিতে অনুপ্রবেশকারী আ.লীগ নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা শুরু করেছে। এ কারণেই গত ১৭ বছরে মিরানের মতো একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকে হারাতে হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি মো. ইদ্রিস আলী বলেন, যুবদল নেতা নিহতের খবর পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হলে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, ৩০ মার্চ হামলার পর গুরুতর আহত মিরানকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে শনিবার রাত ১০টার দিকে মিরানের মৃত্যুর খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে জামিরুলের গ্রামের বাড়িতে আগুন দেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পাশাপাশি রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরা জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াসিকুর রহমান কল্লোলের নেতৃত্বে ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ এবং মাগুরা সদর থানার সামনে সমাবেশ করেন। ওই সমাবেশে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চলন্ত বাসে গার্মেন্টস কর্মীকে পালাক্রমে ধর্ষণ, অতঃপর...

ইরানের নবম দফার হামলায় জ্বলছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের হামলায় হতাহতের সংখ্যা জানাল ইরান

সোমবার ঢাকার যেসব এলাকায় মার্কেট বন্ধ

১৬ জুন : আজকের নামাজের সময়সূচি

ইরানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি হটলাইন চালু

অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে বড় জয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু পিএসজির

এবার ইরান-ইয়েমেন থেকে যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হতে পারে

দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, মামলায় আসামি ১৫৯

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর গোয়েন্দাপ্রধান নিহত

১০

দাউ দাউ করে জ্বলছে ইসরায়েল

১১

ইসরায়েলের বিমানবন্দরে আঘাত হানল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র

১২

নেতানিয়াহুর বাসভবন এলাকায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

১৩

এবার ইসরায়েলিদের ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চল ছাড়তে বলল ইরান

১৪

মুসিয়ালা ম্যাজিক! অকল্যান্ডকে ১০-০তে গুঁড়িয়ে দিল বায়ার্ন

১৫

ইসরায়েলিদের পালাতে বলল সেনাবাহিনী

১৬

ইরানের হাইপারসনিক ইসরায়েলের হাইফা তেল আবিব ও নেগেভ বিমানঘাঁটিতে আঘাত করেছে

১৭

কী কথা বললেন এরদোয়ান-ট্রাম্প?

১৮

ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ছাত্রের হাত ভেঙে দিলেন মাদ্রাসা শিক্ষক

১৯

কোল্ড স্টোরেজে ভাড়া বৃদ্ধি প্রতিবাদে আলু চাষিদের বিক্ষোভ

২০
X