মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাহাড়ে জনপ্রিয় ‘বাউ ডাক’ বছরে ডিম দেয় ২৫০টি

প্রান্তিক খামারিদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নতুন জাতের বাউ ডাক। ছবি : কালবেলা
প্রান্তিক খামারিদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নতুন জাতের বাউ ডাক। ছবি : কালবেলা

পাহাড়ি অঞ্চলে হাঁস পালন এতদিন ছিল সীমিত, কারণ এখানকার জলবায়ু ও ভূ-প্রকৃতি উপযোগী জাতের অভাব ছিল। তবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউ) উদ্ভাবিত নতুন হাঁসের জাত ‘বাউ ডাক’ সেই সীমাবদ্ধতা ভেঙে গত বছর থেকে বেসরকারি সংস্থা আইডিএফের সহযোগিতায় মাটিরাঙ্গার জিয়া নগর এলাকায় পালা শুরু করেছেন নতুন জাতের হাঁস ‘বাউ ডাক’; যা পাহাড়ে হাঁস পালনের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

একইসঙ্গে এ অঞ্চলে প্রবেশপথে বাউ হাঁস রাজ্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে লিফলেট দেখা যায়, যা দর্শনার্থীদের বাড়তি আকর্ষণ ও কৌতূহল সৃষ্টি করে।

‘বাউ-ডাক’ একটি উচ্চ উৎপাদনশীল হাঁসের জাত, যা পাহাড়ি পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। এটি অল্প খাদ্যে দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং ডিম পাড়ার হারও অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, এ জাতের হাঁস বছরে গড়ে ২৫০ থেকে ২৮০টি ডিম দেয়, যা স্থানীয় জাতের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলে এই হাঁসের জাত পাহাড়ি জনগণের জীবিকায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

খামারি উদ্যোক্তা রিনা বেগম জানান, আইডিএফের সহযোগিতায় গত বছরের শেষের দিক থেকে প্রথমবারের মতো ৫০টি হাঁসের বাচ্চা দিয়ে নতুন করে খামার শুরু করেন। দেশি জাতের হাঁসের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি মাংস ও ডিম দেয় বাউ ডাক হাঁস। তাই এ জাতের হাঁস পালনে লোকসান হবার সম্ভাবনা থাকে না। বর্তমানে দেশি হাঁসসহ তার খামারে শতাধিক হাঁস রয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মাহাবুব হোসেন বলেন, আইডিএফের পরামর্শ ও সহযোগিতায় নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে ৫০টি বাউ-ডাক হাঁস পালন শুরু করেছিলাম। এ জাতের হাঁসে অন্যান্য হাঁসের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি মাংস ও ডিম উৎপাদন হচ্ছে। প্রতিটা হাঁস ৪-৫ কেজি পর্যন্ত বড় হয়ে থাকে। সে কারণে বাণিজ্যিকভাবে বাউ জাতের হাঁস পালনের পরিকল্পনা করছি। তবে শহরে এসব হাঁসের চাহিদার তুলনায় গ্রামে কিছুটা কম।

জাকির হোসেন বলেন, আইডিএফে আমাকে ৫০টি হাঁসসহ প্রয়োজনীয় উপদান দেয়। আমি আরও ৩০টি কিনে নিয়ে খামার শুরু করি। হাঁসগুলো বড় এবং দেখতে সুন্দর হয়। সব সময় হাঁসের দাম এক রকম থাকে না তবে সিজনে প্রতিটা হাঁস ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি করা হয়। পুরুষ হাঁসের চাহিদা ও দাম বেশি হয়ে থাকে।

মাটিরাঙ্গা আইডিএফের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পিকেএসএফের অর্থায়নে এই প্রথম মাটিরাঙ্গা উপজেলার ১৩ জন খামারিকে বাউ-হাঁস খামার প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে মাংস উৎপাদনের জন্য ১১ জনকে ৫০টি করে, ডিম উৎপাদনের জন্য ২ জনকে ২৪০টি বাউ হাঁসের বাচ্চা প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে হাঁসের ফিড, খাদ্যের পাত্র, পানির পাত্র, ওষুধসহ ঘর নির্মাণ খরচ আইডিএফ দিয়ে থাকে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুমেন চাকমা বলেন, ‘বাউ ডাক’ জাতটি পাহাড়ি অঞ্চলে আত্মকর্মসংস্থান ও পুষ্টি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন

নিজেই আক্রান্ত হাসপাতাল

জ্বর হলে জিভের স্বাদ চলে যাওয়া হতে পারে বড় রোগের লক্ষণ

মেসির জাদুতে মায়ামির নাটকীয় জয়

গাজা সিটি দখলে এগিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল

দেশ গণতন্ত্রের দিকে ফিরে যাচ্ছে : টুকু

খালি পেটে লেবুপানি কি সবার জন্য নিরাপদ? জানুন বিশেষজ্ঞরা মতামত

লোকালয়ে ঢুকে পড়ল বনের প্রাণী, জনমনে আতঙ্ক

বাসি রুটি-ঘি দিয়ে বানানো যায় স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা

১৭ আগস্ট : আজকের রাশিফলে কী আছে জেনে নিন

১০

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১১

১৭ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১২

রাশিয়ার উপকূলে ভূমিকম্পের আঘাত

১৩

এসিআই পিএলসি-তে চাকরির সুযোগ

১৪

সকাল থেকে ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

১৫

পুকুরে ডুবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ ২ জনের মৃত্যু

১৬

গাজীপুরে আগুনে পুড়ল ৪টি ঝুট গুদাম

১৭

নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড

১৮

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৯

১৭ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

২০
X