মাদারগঞ্জ ( জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খরস্রোতা নদী এখন ফসলি জমি

নদী শুকিয়ে ফসলি জমিতে পরিণত। ছবি : কালবেলা
নদী শুকিয়ে ফসলি জমিতে পরিণত। ছবি : কালবেলা

নাব্য সংকটে অস্তিত্বই হারাতে বসেছে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার একসময়ের খরস্রোতা নদী ঝাড়কাটা। দীর্ঘদিন ড্রেজিং না করায় বালু ও পলি জমে নাব্য হারিয়ে নদীটি পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। শুকিয়ে নদীটি রূপ নিয়েছে আবাদি জমিতে।

জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ, কড়ইচড়া ও গুনারীতলা ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা ঝাড়কাটা নদী দীর্ঘদিন ড্রেজিং না করায় বালু ও পলি জমে নাব্য হারিয়ে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে করে নদীটির কোথাও চলছে ফসল চাষ, কোথাও গো-চারণ, নয়তো বালু উত্তোলন আবার কোথাও পরিণত হয়েছে দিঘিতে।

১৯৪৫ সালে নদীটি উৎপত্তি হয়েছিল। ইসলামপুর উপজেলার হারগিলা নামক স্থানে যমুনা নদীর ভাঙনের ফলে মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর হয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলার ঝাড়কাটা, মহিষবাথান, জটিয়ারপাড়া ও গুনারীতলা ইউনিয়নের গুনারিতলা হয়ে সরিষাবাড়ি উপজেলা দিয়ে যমুনার নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে সৃষ্টি হয় ঝাড়কাটা নদী।

প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীতে এক সময় ছোট-বড় নৌকায় করে ধান, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। নদীটি দেশি মাছে ছিল ভরপুর। নদীর পাড়ের মানুষ ও মাঝিরা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

সে সময় মাদারগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে ইউনিয়নগুলোর সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। রাস্তার অবস্থা এতই বেহাল ছিল যে পায়ে হেঁটেও চলাচল করা কষ্টসাধ্য ছিল। সে সময় নৌকাই ছিল একমাত্র বাহন। এ উপজেলার মানুষ ঝাড়কাটা নদী দিয়ে জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ঝাড়কাটা নদীর কোনো স্থানে বালু ও পলি মাটি জমে জেগেছে চর, আবার কোথাও পরিণত হয়েছে দিঘীতে। নদীতে পানি প্রবাহ না থাকায় তীরবর্তী মানুষেরা নদীর বুকে ফসল চাষ করছে। নদীর ওপর ভাগে ধানের বীজতলা ও নদীর তলায় ধান রোপণ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। বালু ও পলিমাটির স্তর পড়ে নদীটির অস্তিত্ব এখন বিলীনের পথে।

স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, একসময় নদীটি খুব জাগ্রত ছিল। নৌকাসহ অনেক নৌযান চলত। এখন নদীটি মৃত প্রায়।

আরেক বাসিন্দা দুলাল হোসেন বলেন, ছোট বেলায় আমরা কত নদীতে গোসল করছি। একসময় নদীতে খুব স্রোত ছিল। দখলদাররা দুপাশে দখল করায় নদী তার অস্বিত্ব হারিয়েছে।

জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, এ মুহূর্তে ঝাড়কাটা নদীটা নিয়ে কিছু হচ্ছে না। তবে আমাদের নদী খনন প্রকল্পের প্রস্তাবনায় রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আওতায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি পাস হলে নদীটা নিয়ে কাজ হবে, তখন খনন হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ, ভয়ে পালালেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

সিভাসুতে তিন কর্মকর্তার পদাবনতি

দেশের শত্রুরাই পিআর নির্বাচনের বিরোধিতা করতে পারে : চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা, দুটিতে লড়বেন ফয়জুল করীম

দুই সন্তানসহ গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, দেবর নিখোঁজ

ওয়ার্ডপ্রেস কন্ট্রিবিউশনের গর্বিত মুখ বাংলাদেশের নাসিম

বরিশালে এনসিপির পদযাত্র‍ায় ২০ সহস্রাধিক জনতার জমায়াতের প্রস্তুতি

১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নতুন করে লেখালেন স্টার্ক

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময় ৯৬ বাংলাদেশি আটক

চেয়ারে শহীদদের স্বজনেরা, মেঝেতে বসেন ৫ উপদেষ্টা

১০

শ্যামলীতে ছিনতাইকারীদের একজন গ্রেপ্তার, মোটরসাইকেল জব্দ

১১

নারীদের বীরত্বপূর্ণ অবদানে জুলাই উইমেন্স ডে উদযাপন

১২

এসএসসি-এইচএসসিতে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর

১৩

মাকে জীবনের জন্য হুমকি দাবি, বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি ছেলে 

১৪

চরমোনাইর দরবারে এনসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

১৫

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল 

১৬

বাড়ির পেছনে পড়ে ছিল শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ

১৭

আশুলিয়া কলেজ প্রশাসনের ভুলে বিপাকে ১৮৬ এইচএসসি পরীক্ষার্থী

১৮

উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত : হেফাজতে ইসলাম

১৯

নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না : মোস্তফা জামান

২০
X