যমুনা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় শত শত বিঘা বাদামের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অপরিপক্ব বাদাম তোলার চেষ্টা করছেন। উপজেলার স্থল ইউনিয়নের সন্তোষা চরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সম্মিলিত বাদাম চাষিরা পানিতে নেমে অপরিপক্ব বাদাম তুলছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত বহু কৃষক পরিবার লোকশানের মুখে পড়েছে।
চৌহালী উপজেলা কৃষি অফিস ও চাষিরা জানান, যমুনা নদীতে বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার নতুন করে জেগে ওঠা চরে বিগত বছরের ন্যায় এবারও বাদাম চাষ করেছিল বহু কৃষক। স্থল ইউনিয়নের সন্তোষা, কোচগ্রাম, বসন্তপুর, মালিপাড়া, ছোট চৌহালী-বড় চৌহালী, তেঘুরি, স্থলচর ও লাঙ্গলমুড়া, উমারপুর ইউনিয়নের দত্তকান্দি, ছোল, খাষকাউলিয়া, ঘোড়জান, বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ঘুশুরিয়া, হিজুলিয়া, হাটাইল চরের প্রায় ২১শ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়। অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাদাম ঘরে তোলার প্রস্তুতি ছিল তাদের। আকস্মিক জোয়ারে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের নিচু এলাকার বাদামক্ষেত তলিয়ে যায়। এতে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের দুই শতাধিক হেক্টর জমির প্রায় ১৯০০ মণ বাদাম নষ্ট হয়েছে। এ কারণে ওই এলাকার শতাধিক কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
সন্তোষা চরের আবুশামা, লোকমান হোসেন, ছানোয়ার হোসেন, মোসছেদ আলী ও জয়নাল হোসেন জানান, অন্যান্য বছরে বাদামের বাম্পার ফলন দেখে এবার বেশি ক্ষেতে চাষ করি। তবে আমাদের এলাকায় পানিতে তলিয়ে বহু জমির বাদাম নষ্ট হয়েছে। এ কারণে কোমরপানিতে নেমে অপরিপক্ব বাদাম তুলতে হচ্ছে।
এদিকে যমুনার পশ্চিম তীর এনায়েতপুরে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে জমি তলিয়ে যাওয়ায় বাদাম তুলে নদীর পাড়ে কৃষক পরিবারের নারী, শিশুসহ সব সদস্য মিলে বাদাম ছাড়াচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও তারা জমির পাড়ে শুকনা স্থানে বাদাম রোদে শুকাচ্ছে। এতে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সন্তোষা গ্রামের ইউপি সদস্য হাসান আলী জানান, কৃষকদের স্বপ্ন পানিতে তলিয়ে গেছে। বাদামক্ষেত নষ্ট ও তলিয়ে যাওয়ায় বহু কৃষক এ বছর লোকশানের মুখে পড়বে। সরকারিভাবে তাদের সহায়তার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলার স্থল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুহুরাইয়া জানান, যমুনার চরাঞ্চলের বাদাম ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। অপরিপক্ব বাদাম তুলে বহু কৃষক পরিবার লোকশানের মুখে পড়েছে।
চৌহালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে যমুনা নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে চরাঞ্চলের নিচু বাদামক্ষেত তলিয়ে গেছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। বিশেষ প্রণোদনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন