বগুড়ার নন্দীগ্রামে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার এজাহারভুক্ত আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। রোববার (০৪ মে) সকাল ১০টার দিকে নন্দীগ্রাম থানা চত্বরে তারা এ বিক্ষোভ করেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন।
জানা যায়, বিক্ষোভে নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহমান ও পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল আলিম উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ অবস্থান কর্মসূচিতে থানা চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মামলার এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। পরে জামায়াত নেতারা তাদের কর্মীদের নিয়ে থানা ত্যাগ করেন।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ও নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব নজরুল ইসলামের ওপর হামলা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় শনিবার (০৩ মে) রাতে নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে নন্দীগ্রাম থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন—বুড়ইল এলাকার মোহাম্মদ জাকারিয়া ইসলাম, আতিকুল ইসলাম ও কইগাড়ি গ্রামের আবদুর রহিম।
গ্রেপ্তার জাকারিয়া ইসলাম জামায়াতের যুব বিভাগের বুড়ইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সেক্রেটারি, আতিকুল ইসলাম জামায়াতের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ওয়ার্ড সভাপতি এবং আবদুর রহিম শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু মুসা সরকার বলেন, ‘হামলার মামলার এজাহারনামীয় আসামি আবদুর রহিম আসলে যুবলীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক। অথচ জামায়াত-শিবিরের নেতারা তাকে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতা দাবি করে থানা চত্বরে এসে বিক্ষোভ করে। আমরা আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার করেছি, কোনো আসামিকে থানা থেকে ছাড়া সম্ভব নয়।’
তবে এ বিষয়ে ভিন্ন দাবি করেছেন জামায়াত নেতারা।
নন্দীগ্রাম পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল আলিম বলেন, ‘নজরুল ইসলাম নামধারী এক পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদিক। আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে তিনি জামায়াত-শিবিরের বহু নেতা-কর্মীকে হয়রানি করেছেন। হামলার সঙ্গে জামায়াতের কোনো কর্মী জড়িত না থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে। এমনকি উপজেলার দুজন সাংবাদিককেও এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। গ্রেপ্তারে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মীরা থানায় গিয়েছিল। পরে আমরা তাদের বুঝিয়ে শান্ত করি।’
মন্তব্য করুন