কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে আরেকটি ষড়যন্ত্র চলছে : ডা. তাহের

নির্বাচনি দায়িত্বশীল সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি : কালবেলা
নির্বাচনি দায়িত্বশীল সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য আরেকটি নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে।

শনিবার (৩১ মে) চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে নোয়াবাজার খাদিজা হোটেল মিলনায়তনে নির্বাচনি দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, যে জাতি ৪৭-এ স্বাধীনতা এনেছে, ৫২-এর ভাষা অধিকার সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। তারা আবার ৭১ সালে এক হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জীবন, রক্ত, ইজ্জত বিলিয়ে দিয়ে আরেকবার স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। জুলাই-আগস্টে সবার অংশগ্রহণে এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছে। তারা আবার একাত্ম হয়ে জাগ্রত জনতার ব্যানারে সব ষড়ষন্ত্রকে ব্যর্থ করে দেবে এবং আরেকটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, আমাদের ভূমিকা এমন হওয়া উচিত হবে না, যেদিন থেকে এ দেশের মানুষ আবার হতাশ হয়ে যায়। আবার শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা হয়। সেই নারী, সেই শিশু, সর্বসাধারণ, রিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা, নিঃস্ব মানুষেরা যে আত্মত্যাগ করে মহান বিজয় অর্জন করেছিল, তাদের সেই ত্যাগ এবং রক্ত যেন বৃথা না হয়। এ জাতি বারবার সংগ্রাম করলেও কতিপয় নেতৃত্ব এবং লোভী মানুষের কারণে বঞ্চিত হয়েছিল, প্রতারিত হয়েছিল।

ডা. তাহের বলেন, মানুষ আশা করে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এ দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভেতরে এ চেতনাবোধ ও ভূমিকায় উত্তীর্ণ হবে যে, দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবে। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব। আমরা কোনো কিছুর কাছে মাথা নত করব না। একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠন করব। এখানে আমাদের ধৈর্যের প্রয়োজন, ত্যাগী মনোভাবের প্রয়োজন। এখানে ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ এবং জনগণের স্বার্থ বড় হোক। এটাই রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদের প্রধান স্লোগান হতে হবে আজকের এ বাংলাদেশে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় দেশ। কারণ, অতীতে বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, মাথা নত করার চেষ্টা করা হয়েছিল, মানুষের সংগ্রামে সে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। আগামী দিনেও কেউ যদি মনে করেন, জোর-জবরদস্তিমূলকভাবে ক্ষমতায় গেলেই তারা সফলকাম হবে আমি এটা বিশ্বাস করি না। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, স্বাভাবিক ধারায়, গণতান্ত্রিক ধারায়, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে স্বাভাবিকভাবে যে পরিবর্তন আসবে, নির্বাচন আসবে, সে নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়ে সরকার পরিচালনা করবে সে রাজনীতি টিকে থাকবে।

সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, শর্টকার্ট কোনো রাস্তায় যদি কেউ ক্ষমতায় যেতে চায়, ইতিহাস এ কথা বলে, তারা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি, ভবিষ্যতেও পারবে না। সুতরাং এ দেশের মানুষের আরও রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন, এটা যেন না হয়। সব রাজনৈতিক দল ও নেতাদের প্রতি আরেকটু সহনশীল হয়ে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাব।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তন এটি ইন্টিরিয়র গর্ভমেন্টের অন্যতম প্রধান কাজ। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলাম, আপনাকে নির্বাচন দিতে হবে। যদি নির্বাচন ডিসেম্বরে হয় জামায়াতের কোনো আপত্তি নেই। তার আগে যদি মৌলিক সংস্কার শেষ হয়। যদি মৌলিক সংস্কার হওয়ার জন্য আরও দুই মাস বেশি লাগে, তাহলে ডিসেম্বরের ওপর জিদ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার মানে হয় না। সুতরাং, নির্বাচন ডিসেম্বর, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে হোক জামায়াতের আপত্তি থাকবে না।

ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ আপনি ঘোষণা করুন। আমরা দুটি বিষয়ে রোডম্যাপ চেয়েছি, একটি নির্বাচনের আরেকটি সংস্কারের। এটা আপনার মতো করেই আপনি ঘোষণা করুন। তাতেই আমি মনে করি পরিস্থিতি প্রশমিত হবে। এক মাস বা দুই মাসের পার্থক্য এ দেশের জনগণ মেনে নেবে। তবে ডিক্লারেশনটা অত্যন্ত প্রয়োজন, কারণ আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। রোডম্যাপের ডেট ঘোষণা করলে এ আস্থার সংকট কমে যাবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মু. মাহফুজর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইনের পরিচালনায় দায়িত্বশীল সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক উপজেলা আমির ভিপি সাহাব উদ্দিন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ফজলুর রহমান মজুমদার।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রহিম, জামায়াত নেতা আইয়ুব আলী ফরায়েজী, মাওলানা আব্দুল কাইউম, ডা. মফিজুর রহমান, মাওলানা আব্দুল হাকিম, আলহাজ শেখ আহমেদ, মাওলানা আবুল হাশেম, কাজী আব্দুল কাদের ও উজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আবুল হাসেম, ডা. মোশাররফ হোসেন বাহার, এ এন এম আবু তাহের, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ও কালিকাপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির মাহমুদ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো নিয়ে রিজভীর প্রতিক্রিয়া

এক টাকাও খরচ করতে পারেনি ১২ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ

এবার ধান ক্ষেত ও উঠানে মিলল সাদাপাথর

সহকারী শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ ভাইস প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে

পরিবারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন আমিরের ভাই

মুরাদকে ওএসডি করে সারওয়ারকে ডিসি, সিলেটে মিষ্টি বিতরণ

হুমাইরার মৃত্যু রহস্যে নতুন মোড়

শ্রমিক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি গ্রেপ্তার

কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়ে শুষ্ক মরুভূমিকে সবুজ বানাবে সৌদি

জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু

১০

ডাকসু নির্বাচন / একটি গুপ্ত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলে মব উসকে দিচ্ছে : ছাত্রদল

১১

আ.লীগের অফিস নির্মাণকাজ বন্ধ করলেন ইউএনও

১২

থানার ভেতর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৩

অধ্যাদেশ কিংবা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে : বুলবুল

১৪

তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক না করার আহ্বান পেশাজীবী সংগঠনগুলোর

১৫

ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু

১৬

জাতীয় দলে ফিরতে দুই শর্ত বাবরের সামনে

১৭

জনগণের অধিকার রক্ষায় জেল খাটলেও আপোষ করেননি খালেদা জিয়া : চসিক মেয়র

১৮

প্রধান শিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল

১৯

অস্ট্রেলিয়া সিরিজে প্রোটিয়া দলে চমকজাগানো পরিবর্তন

২০
X