নড়াইলের লোহাগড়ায় এইচএসসি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় ৪র্থ সেটের পরিবর্তে ২য় সেটের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবসহ দুজনকে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি ও শোকজ করেছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
রোববার (২৯ জুন) উপজেলা শহরের লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনাটি ঘটে।
পরীক্ষা শেষে বিষয়টি জানাজানি হলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ভিড় জমান এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েন।
এদিকে পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা নেওয়া প্রশ্নপত্রেই খাতা মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকাল ১০টা থেকে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৫৬০ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় বোর্ডের নির্দেশনা ছিল ৪নং সেটে পরীক্ষা গ্রহণের। কিন্তু ভুলবশত লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ২নং সেটে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা বাইরে এলে অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হলে তারা প্রশ্ন মেলায়। তখন সেটের ভিন্নতার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে। এক পর্যায়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যাচাই-বাছাই করে জানতে পারেন লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রশ্নের সেট পরিবর্তন হয়েছে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বেকায়দায় পড়েন। এ সময় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা।
লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ভুল সেটে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনাটি পরীক্ষা শেষ হলে কিছুক্ষণ পর জানতে পারি। বিষয়টি নিয়ে আমরা অত্যন্ত চিন্তিত। আমাদের উত্তরপত্রের বিষয়ে কী হবে তা নিয়েও আমরা চিন্তিত।
এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব ও লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা রিসিভ হয়নি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রিয়াদ কালবেলাকে জানান, লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস এবং ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম। তাদের দায়িত্বহীনতার বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রফেসর আব্দুল মতিন কালবেলাকে বলেন, পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি বিবেচনা করে যে সেটে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, ওই সেটের প্রশ্ন দিয়েই খাতা মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস ও ট্যাগ অফিসার লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামীতে যাতে ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায় সে ব্যাপারে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
মন্তব্য করুন