দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৫, ০১:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে হত্যা করেন মহাদেব

গ্রেপ্তার মহাদেব রায়। ছবি : কালবেলা
গ্রেপ্তার মহাদেব রায়। ছবি : কালবেলা

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্রী সুলতানা আক্তার রত্না হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। আদালতে প্রেমিক স্বীকার করেছেন, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় রত্নাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে পঞ্চগড় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে দেবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া এলাকায় নিজ বাসার কাছাকাছি ধানক্ষেতে সুলতানা আক্তার রত্নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করে। রত্নার মরদেহের গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন ছিল। পাশাপাশি একটি কাপড়ের ব্যাগে তার পরনের কাপড় ও মোবাইল ফোনের কাভার পাওয়া যায়।

মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু করে। রত্নার ঘর তল্লাশিতে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়, যেখানে মহাদেবের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ও তার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা উল্লেখ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তদন্তের অংশ হিসেবে রত্নার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বরের কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করা হয়। মোবাইল কথোপকথন ও ঘটনার সময়কার অবস্থান বিশ্লেষণের পর বুধবার দুপুর আড়াইটায় একই ইউনিয়নের পুণ্ডিপাড়া এলাকার খোকা বর্মনের ছেলে মহাদেব রায়কে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মহাদেব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার একাধিকবার রত্নার সঙ্গে ফোনে ও মেসেজে কথোপকথন হয়। একপর্যায়ে সামনাসামনি দেখা করার জন্য রত্নাকে বাসা থেকে ডেকে আনেন তিনি। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে রত্নাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন এবং তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে ফোনটি ভেঙে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দেবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, মহাদেব ও রত্নার মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রত্না বিয়ের জন্য চাপ দিলে মহাদেব এড়িয়ে যান। এরই মধ্যে তার পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয় এবং আশীর্বাদ অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়। এর পর থেকেই তাদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়।

দেবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা বলেন, পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই কলেজছাত্রী রত্না হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে সক্ষম হয়েছে।

গত বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে নিহত রত্নার বাবা রবিউল ইসলাম দেবীগঞ্জ থানায় মহাদেব রায়সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে মহাদেবকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

গভীর রাতে চলন্ত বাসে আগুন

বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে চাই : মান্না

মোটরসাইকেলে এসে আগুন দিয়ে পালাল দুর্বৃত্তরা

জামালপুরে একাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট

পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

ইভ্যালির রাসেলের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড

সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ আটক ৪

ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার

১০

আ.লীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পড়ে ছিল ৯ রাউন্ড গুলির খোসা

১১

উত্তরায় যুব-স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অবস্থান

১২

জবি ছাত্রী হলে ছাত্রদলের উপহার সামগ্রী বিতরণ

১৩

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার কফিল উদ্দিনের

১৪

বরগুনায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

১৫

কক্সবাজারে মার্কেটে আগুন

১৬

৮ দলের কর্মসূচি নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পোস্ট

১৭

চট্টগ্রামে বিজিবি মোতায়েন, সর্বোচ্চ সতর্কতায় পুলিশ

১৮

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নদীগুলোর নাব্যতা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেবে : বাচ্চু

১৯

নিক্সনের গানম্যানের নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছিল পেট্রোল বোমা ও ককটেল : পুলিশ

২০
X