পিরোজপুরের নেছারাবাদের জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত একটি মসজিদের নামে টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য মো. আল-আমিনের বিরুদ্ধে। তিন বছর পূর্বে মসজিদের পাশে টিউবওয়েল বসানোর জন্য জেলা পরিষদের বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা তুললেও এখনো কাজ শুরু করেননি তিনি।
জানা যায়, নেছারাবাদ উপজেলার সারেংকাঠি ৭নং ওয়ার্ডের বিষ্ণুকাঠি গ্রামে হাওলাদার বাড়ির বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের নামে ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠোমো রক্ষণাবেক্ষণ উন্নয়ন প্রকল্পে মসজিদ টিউবওয়েল স্থাপন বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। এ বরাদ্দকৃত ৫০ হাজার টাকা ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আল আমিন উত্তোলন করলেও নানা অজুহাতে ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের দাবি, মসজিদের টিউবওয়েল বসানোর কথা বলে জেলা পরিষদের প্রকল্পের টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি সদস্য আলামিন। একাধিকবার কাজের প্রতিশ্রুতি দিলেও টিউবওয়েলের বরাদ্দকৃত টাকা তিনি নিজের পকেটে রেখে দিয়েছেন। সরকারি বরাদ্দের টাকা মসজিদ কমিটির কাছে বুঝিয়ে না দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পকেটে রাখার কোনো এখতিয়ার নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের মসজিদের জন্য জেলা পরিষদ একটি টিউবওয়েল বরাদ্দ দেয়। কিন্তু প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ইউপি সদস্য আল আমিন তা স্থাপন করেননি। আমরা বারবার বলার পরও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। বরং সেই টিউবয়েলের বরাদ্দ টাকা সে আত্মসাৎ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘তিন বছর আগে সারেংকাঠি ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোট ৯টি টিউবওয়েল বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি স্থাপিত হলেও ক্ষমতার জেরে শুধু ৭নং ওয়ার্ডের টিউবওয়েলটি বসায়নি ওই আলামিন মেম্বার।’
মসজিদ কমিটির অন্যতম সদস্য ও সমাজসেবক আব্দুল কুদ্দুস খান বলেন, ‘আল আমিন কিছু পাইপ কিনেছিলেন বটে, পাইপগুলো দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত বিধায় নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য কিছু দৃশ্যমান দেখা যাচ্ছে না। কাজের জন্য বারবার তাগিদ দিলেও তিনি কেবল কাল-পরশু বলে সময় নষ্ট করছেন। মসজিদের মুসল্লিদের টিউবওয়েলের জন্য দিন দিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আল-আমিন মেম্বার টিউবওয়েল বসাক নতুবা বরাদ্দের অবশিষ্ট টাকা মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিক।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্য মো. আল আমিন হোসেন অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘জেলা পরিষদ থেকে টিউবওয়েল স্থাপন করার জন্য ৫০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। তৎকালীন সময়ে কিছু পাইপ ক্রয় করেছিলাম কিন্তু নানা জটিলতার জন্য আজও টিউবওয়েল বসানো হয়নি। কিছুদিনের মধ্যে বসানোর চেষ্টা করব।’
সারেংকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। টাকা আত্মসাৎসহ সব অভিযোগের বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নেব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অর্থ ফেরতসহ তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মন্তব্য করুন