জামালপুরের মাদারগঞ্জে মাদ্রাসায় না এসেও হাজিরা খাতায় সই দিয়ে নিয়মিত বেতন তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মাওলানা মো. আব্দুল ওয়াহেদ উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের মিলনবাজার ভাংবাড়ী আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি মাদারগঞ্জ আল আকাবা সমবায় সমিতির পরিচালক।
জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে কয়েকশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাদারগঞ্জ আল আকাবা সমিতির গ্রাহকরা ৮ পরিচালনা পর্ষদ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় প্রতারণার মামলা করেন। এতে মামলার এজাহারে পরিচালক আব্দুল ওয়াহেদ নাম থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। এরপর থেকে তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত।
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। কিন্তু পলাতক থেকেও তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন।
বিষয়টি জানতে সরেজমিনে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষটি ফাঁকা দেখা যায়। একইসঙ্গে মাদ্রাসার হাজিরা খাতায় অধ্যক্ষের উপস্থিতির স্বাক্ষর দেখা যায়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানান, জানুয়ারি থেকে অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ মাদ্রাসায় আসেন না।
নবম শ্রেণির মো. রহমতুল্লাহ, আশিনুর, মিলন হাসানসহ কয়েক শিক্ষার্থী জানান, তাদের অধ্যক্ষ ৫-৬ মাস ধরে মাদ্রাসায় আসেন না।
মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওনানা মামুনুর রশীদ বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয় মাদ্রাসা আসেন না। তবে তার বেতনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
জানা গেছে, অভিযুক্ত অধ্যক্ষ একসময় উপজেলা জামাতের আমির ছিলেন। তবে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে দল তাকে বহিষ্কার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরহাদ হোসেন।
জামায়াত থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে ভিড় করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাদ্রাসার ৩ কর্মচারীর বেতন আটকে দেন তিনি। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আব্দুল ওয়াহেদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন করা হলে নম্বরটি বন্ধ দেখায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাদির শাহ বলেন, মাদ্রাসায় না এসে হাজিরা খাতায় সই করে বেতন উত্তোলনের সুযোগ নেই। দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন