

বগুড়ায় বেকারি ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রী শামিমা আক্তার ও তার খালাতো ভাই পরকীয়া প্রেমিক বিপুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) বগুড়া সদর উপজেলার হাজরাদীঘি গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামিমা আক্তার এবং তার পরকীয়া প্রেমিক বিপুল মিয়া। পরকীয়ায় বাধা হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে জহুরুলকে হত্যা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুজনেই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, শৈশব থেকেই শামিমা আক্তার ও তার ফুফাতো ভাই বিপুলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিপুলকে না পেলেও জহুরুলের সঙ্গে শামিমার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরেও শামিমা আর বিপুলের পরকীয়ার সম্পর্ক চলমান ছিল। এ নিয়ে দাম্পত্য জীবনে জহুরুলের সঙ্গে শামীমার বিরোধ তৈরি হয়। তাকে চিরতরে সরিয়ে দিতেই শামিমা ও বিপুল হত্যার পরিকল্পনা করেন।
গত সোমবার রাতে স্ত্রী শামিমা আক্তার দুধের সঙ্গে প্রায় ১৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন স্বামী জহুরুলকে। ওষুধ খেয়ে জহুরুল অচেতন হয়ে পড়লে শামিমা ফোন করেন প্রেমিক বিপুলকে। এরপর ঘুমন্ত জহুরুলকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির পাশের একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে। সেখানে দেয়ালের সঙ্গে সজোরে আঘাত করে তার মাথায় গুরুতর জখম করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভাঙা টয়লেটের টাইলস দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ফেলে রাখা হয় পাশের ধানক্ষেতে।
হত্যার পর শামিমা আক্তার নিজের অপরাধ ঢাকতে নাটকীয়তার আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর মরদেহ উদ্ধারের পর তিনি নিজেই সাংবাদিকদের কাছে স্বামীর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করেন। তবে এ হত্যার ঘটনায় শামিমা আক্তারের বাবা বাদী হয়ে মামলা করার পর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ নিশ্চিত হয়, নিহত জহুরুলের স্ত্রী শামিমাই এ হত্যার নেপথ্যে ছিলেন।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, তদন্তের পরই আমরা জানতে পারি, পরকীয়ার জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সব তথ্য পাওয়া গেছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন