

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ২৯ বছরেও শুরু হয়নি খানজাহান আলী বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ। ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, অর্থনৈতিক বিবেচনায় বিমানবন্দরটি অতিগুরুত্বপূর্ণ হলেও কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এ বিমান বন্দরটি আলোর মুখ দেখেনি এখনও।
মোংলা সমুদ্রবন্দর, ইপিজেড, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও এখানকার শিল্পকারখানার কথা বিবেচনায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে ২৭ জানুয়ারি মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে ফয়েলা এলাকায় খানজাহান আলী বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
এরপর ২০১১ সালে ৬২৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে প্রকল্পটি অনুমোদনও হয়। দীর্ঘ কয়েক বছরে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, মাটি ভরাট ছাড়া কোনো কাজই হয়নি এখানে। দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিনেও বিমানবন্দরটি না হওয়ায় ক্ষতির কবলে পড়তে হচ্ছে তাদের।
খুলনার রহিম ফিশ প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ হাসান (পান্না) জানান, তাদের ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য কক্সবাজার থেকে মাদার চিংড়ি ক্রয় করতে হয়। এ জন্য তাদের প্রথমে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম, পরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে যশোর। এরপর যশোর থেকে সড়ক পথে খুলনা আসতে হয়। এতে অনেক সময় মাছ মারা যায়। এর ফলে লোকসানে পড়তে হয় তাদের। তাই দ্রুত মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে খানজাহান আলী বিমানবন্দর তৈরি হওয়া দরকার।
মোংলা বন্দর সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. মোশারফ হোসেন জানান, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি হওয়ায় মোংলা বন্দর ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বেড়েছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত না হলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে জড়িত ব্যবসায়ীরা আবারও মুখ ফিরিয়ে নেবে মোংলা বন্দর থেকে। তাই বন্দরসংলগ্ন এলাকায় বিমানবন্দরটির নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু হওয়া প্রয়োজন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান মুন্সি জানান, বন্দরকেন্দ্রিক বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বিমানবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ করার দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের।
খুলানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি হাসান জানান, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নোয়ন ও শিল্পের সম্প্রসারন করে অর্থনৈতিকভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে শক্তিশালী করতে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ জরুরি।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গেল সরকারের সময় ভারতের একটি প্রতিষ্ঠান পিপিপির অধীনে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচায় করে। সে সময় ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বিমানবন্দর নির্মাণ সম্ভবপর মনে হয়নি, তাই স্থগিত হয়ে যায় প্রকল্পটি।
মন্তব্য করুন