

বগুড়া শহীদ চান্দু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সরকারি অনুমতি ছাড়াই একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করায় শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, কার অনুমতিতে হেলিকপ্টারটি স্টেডিয়ামে অবতরণ করেছে। এতে করে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে আকস্মিকভাবে স্টেডিয়ামের আকাশে দেখা যায় একটি হেলিকপ্টার। মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে কৌতূহল। হেলিকপ্টারের শব্দে স্থানীয়রা ছুটে আসেন মাঠের দিকে।
অনেকের ধারণা ছিল, রাজধানী থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কোনো উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি হয়তো এসেছেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই ধারণা ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়।
স্টেডিয়ামের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানান, হেলিকপ্টারটিতে বিসিবির কেউ ছিলেন না; এটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্যবহার করেছেন। দেশসেরা এই খেলার মাঠে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হেলিকপ্টার অবতরণের বিষয়টি জানাজানির পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।
নিয়ম অনুযায়ী, খোলা জায়গায় বেসরকারি হেলিকপ্টার অবতরণ করতে চাইলে সাধারণত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), স্থানীয় প্রশাসন এবং জমির মালিকের অনুমতি প্রয়োজন হয়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৭ অনুযায়ী, জমির মালিককে অন্তত তিন দিন আগে জানাতে হয়। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে এই নিয়ম শিথিলযোগ্য।
স্থানীয়রা বলেন, হেলিকপ্টারের শব্দ শুনে আমরা মাঠে আসি। প্রথমে ভেবেছিলাম আন্তর্জাতিক খেলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিসিবির প্রতিনিধিরা মাঠ পরিদর্শনে এসেছেন। কিন্তু পরে জানতে পারি, এটি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের আয়োজন।
স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল কালবেলাকে বলেন, রহিম আফরোজ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঢাকা থেকে বগুড়ায় এসেছেন একটি প্রোগ্রামের জন্য। তারা স্টেডিয়ামে অবতরণের জন্য যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু আমরা অনুমতি দিতে পারি না। তাই তাদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। পরে পুলিশ ও ডিএসবি উপস্থিত ছিল।
ভেন্যু ম্যানেজার আরও বলেন, এর আগেও স্টেডিয়ামে বেসরকারি হেলিকপ্টার অবতরণ করেছে। তবে জেলা পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা অবতরণের অনুমতি দিইনি। আমাদের কাছে শুধু নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছিল, আমরা সেটাই দিয়েছি।
বিসিবি পরিচালক রাবিদ ইমাম কালবেলাকে জানায়, স্টেডিয়াম বিসিবির নয়, এটি ক্রীড়া পরিষদের অধীন। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান কালবেলাকে বলেন, তিনি এ ধরনের অবতরণের অনুমতি দেননি। বিষয়টি তার অজান্তে ঘটেছে।
তিনি বলেন, সরকারি হেলিকপ্টার হলেও আমাদের জানাতে হয়। বেসরকারি হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে অবশ্যই আবেদন করতে হবে এবং আমাদের অনুমতির পরই তা অবতরণ করতে পারবে।
মন্তব্য করুন