পানির পাম্প বিকল হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে পানি সংকটে পড়েছে নরসিংদীর বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটি। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও সেখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অন্যদিকে এক সপ্তাহ ধরে পানির ব্যবস্থা না হওয়ায় চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা।
বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসাসেবা নেন বেলাব ও পার্শ্ববর্তী কুলিয়ারচর উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। হাসপাতালটিতে শুরু থেকে এক্সরে, ইসিজি, অভিজ্ঞ ডাক্তার, ওটির সমস্যা থাকলেও কয়েক বছর ধরে এসব সমস্যার সমাধান হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই গত এক সপ্তাহ ধরে এই হাসপাতালের একমাত্র পানির পাম্পটি নষ্ট হয়ে যায়। পানির পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর তা মেরামতের জন্য পাঠানো হয় নরসিংদীতে। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে নষ্ট পানির পাম্প মেরামতের জন্য দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত তা মেরামত করা হয়নি। পানির পাম্প না থাকায় পানির সংকট দেখা দেয় হাসপাতালে। যার প্রভাব পড়ে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী ও কর্মরত স্টাফদের মধ্যে।
খবর পেয়ে সরেজমিনে বৃহস্পতিবার ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, পুরো হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন মাত্র পাঁচজন রোগী। হাসপাতালের এক পাশে পুরাতন বিল্ডিংয়ে পুরুষ ওয়ার্ডের সবগুলো সিটই খালি। মহিলা ওয়ার্ডেরও একই অবস্থা। তবে মহিলা ওয়ার্ডে একজন রোগী ভর্তি আছেন। ওয়ার্ড ও কেবিনের ভিতরের গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড ও কেবিনের ট্যাপ থেকে পানি পড়ছে না।
হাসপাতালে ভর্তি কয়েকজন রোগী জানান, হাসপাতালে পানি না থাকায় তারা বাইরে থেকে পানি আনেন। যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা একটু ভালো তারা পানি কিনে আনছেন। পানির সংকট থাকায় প্রাকৃতিক কাজে টয়লেটেও যেতে পারছেন না অনেকে। শৌচাগারেও তীব্র দুর্গন্ধ। এমন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ভর্তি হওয়া রোগীরা চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরছেন।
হাসপাতালে ভর্তি মানিক মিয়া নামে এক রোগী জানান, গত সোমবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি হবার পর এ পর্যন্ত তিনি পানি পাননি। চিকিৎসাও তেমন পাচ্ছেন না। পানি সংকটের কারণে বাথরুমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
রোগীর স্বজন মো. অলফত আলী বলেন, আমাদের পানি না হলে এক মিনিটও চলে না। এখানে চিকিৎসার জন্য আসার পর থেকে টয়লেটের ট্যাপে পানি নেই। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা গরিব বিধায় সরকারি হাসপাতালে আসছি।
হাসপাতালের দুতলায় রোগীদের দায়িত্বে থাকা নাসিমা সরকার নামে সিনিয়র একজন স্টাফ নার্স বলেন, পানির পাম্প এক সপ্তাহ ধরে নষ্ট। রোগী যে ভর্তি হচ্ছে না তা নয়। তবে পানির কারণে তাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দা তানজিনা আফরিনকে না পেয়ে কথা হয় হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার ডা. বেনজির দুরদানার সঙ্গে। তিনি জানান, পানির পাম্পটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে এ সমস্যা হয়েছে। পানির পাম্প ঠিক করতে দেওয়া হয়েছে। এটি মেরামত হলেই আর এ সমস্যা থাকবে না।
মন্তব্য করুন