লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বড় ভাই সাইফুল আলমকে (৭৫) লাঠির আঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন মৃধার (৫০) বিরুদ্ধে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কবিরহাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে দেলোয়ার ও তার সহযোগী শিমুল হোসেন (২৫), আবু মুসা মোহন (৩৫) এবং দুই নারীসহ ৭ জনকে আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেছেন।
রায়পুর থানার এসআই কমল দে জানান, ঘটনার পর থেকে আসামিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জমি ও নারিকেল গাছ দখল নিয়ে মৃত সাইদুর রহমান মৃধার দুই ছেলে ঢাকায় বসবাসকারী শপিং ব্যাগ ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের (৭৫) সঙ্গে ও গ্রামে বসবাসকারী ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন মৃধার বিরোধ চলছে। বুধবার সাইফুল আলম তার পরিবার নিয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওই বিরোধকৃত জমির জের ধরে শনিবার বিকালে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে দেলোয়ার ও শিমুল লাঠি ও গাছের ঢাল দিয়ে সাইফিল আলমের মাথায় আঘাত করলে তিনি মারাত্মক জখম হন। দ্রুত সাইফুল আলমকে উদ্ধার করে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে নিলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার ইয়াসিন মাহমুদ ঢাকায় পাঠালে পথেই মারা যান তিনি।
এদিকে এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন বলেন, বাড়ির যাতায়াতে রাস্তার জমি ও তিনটি নারিকেল গাছ নিয়ে সাইফুল আলমের সঙ্গে তারই আপন ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন মৃধার বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধপূর্ণ জমি ও গাছ দখল নিয়ে দুই ভাইয়ের পরিবারে ঝগড়া হয় এবং এক পর্যায়ে মারামারি ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা হয়।
অভিযুক্ত দেলোয়ার মৃধা মোবাইলে জানান, আমার বড় ভাই সাইফুল আলমসহ তার স্ত্রী ও সন্তানরা অন্যায়ভাবে আমার জমি দখল করতে আসে। এ সময় আমি ও আমার পরিবার বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা করে আহত করেছে। আমিসহ তিনজন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আমিও মামলা করব।
রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে ছোট ভাইসহ তার লোকদের দ্বারা হামলার শিকার হয়ে ব্যবসায়ী সাইফুল আলম নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মন্তব্য করুন