শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
রুমা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দীর্ঘ আট মাস পর বাড়ি ফিরল ১১ পরিবার

রুমায় নিজ বসতবাড়িতে ফেরা ১১ পরিবারের সদস্যরা। ছবি : কালবেলা
রুমায় নিজ বসতবাড়িতে ফেরা ১১ পরিবারের সদস্যরা। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘ আট মাস বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পর বাড়ি ফিরেছেন নারী ও শিশুসহ বম সম্প্রদায়েদর ১১ পরিবারের ৪৮ জন সদস্য। শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে রুমা উপজেলা সীমান্তঘেঁষা ও থানচি সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে দুর্গম ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দুর্গম প্রাতা পাড়ায় নিজেদের বাড়িতে ফিরেছেন তারা।

প্রাতা পাড়াবাসীরা জানায়, চলতি বছরে মার্চ মাসে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) কর্তৃক বাকলাই পাড়া সেনা ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। পরে সেনাবাহিনীও কেএনএফের আস্তানায় পাল্টা অভিযান চালালে গোলাগুলিতে সেখানকার স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। ওই সময় নিরাপদে আশ্রয় নিতে নিজ বাড়ি প্রাতা পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় বম সম্প্রদায়ের ১১ পরিবার। বান্দরবানের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে সম্প্রতি মুখোমুখি শান্তি বৈঠকের পর এই প্রথম ১১ পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৪৮ জন ফিরলেন নিজেদের বাড়ি প্রাতা পাড়ায়।

ফিরে আসা একজনের নাম লালমিনসাং বম (৩৭) বলেন, দীর্ঘ আট থেকে ৯ মাস আগে তারা পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিল। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নিজ বাড়ি প্রাতা পাড়ায় ফিরতে পেরে খুব আনন্দবোধ করছি। আমরা স্বেচ্ছায় কখনো পাড়া ছেড়ে কোথাও চলে যায়নি। আমরা শান্তি ও নিরাপদে বসবাস করতে চাই।

সূত্র মতে, গত ২২ জুন পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে পরিষদ চেয়ারম্যান ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ক্যশৈহ্লা শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করে। গত ১৯ জুলাই, ৪ আগস্ট, ২১ সেপ্টেম্বর পৃথক স্থান থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১০ সদস্য ও ভার্চুয়ালি কেএনএফের ৪ সদস্য বৈঠকে অংশ নেয়, আর সামনাসামনি এটিই প্রথম বৈঠক।

আরও জানা গেছে, কেএনএফের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে জেলায় পর্যটক যাতায়তে দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা জারি ও পরে প্রত্যাহার করে জেলা প্রশাসন। গত বছরের ১৫ নভেম্বরের পর ১৩২টি পরিবারের ৫৪৮ জন ভারতের মিজোরামে আশ্রয় নেয়। গত ২৮ জানুয়ারি রুমা সদরে ১৪০ মারমা নারী-পুরুষ ও শিশু আশ্রয় গ্রহণ করলেও তারা গত ৫ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় ফিরে যায়। ১০ মার্চ রাঙামাটির বিলাইছড়ির ৪নং বড়থলি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ৩টি পাড়া থেকে ৫৬ পরিবারের ২২০ জন তংচঙ্গ্যা রেইছা ও রোয়াংছড়ি সদরে আশ্রয় গ্রহণ করে। এই ঘটনায় ৫ সেনা সদস্য নিহত ও কেএনএফ সদস্যসহ নিহত হয় আরও ১৬ জন, অপহরণের শিকার হয় অন্তত ২০ জন। এর ফলে জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য ধস ও জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজ করে।

অন্যদিকে কেএনএফের সাথে জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজশ আছে দাবি করে যৌথ বাহিনী জানায়, এই সময়ে পাহাড়ে অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৬৮ জন জঙ্গি ও কেএনএফের বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়, এ সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ক্যা শৈ হ্লা জানান, কেএনএফের সাথে সশরীরে প্রথম বৈঠক খুবই আন্তরিক ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের মাধ্যমে চলমান সমস্যা নিরসন হবে।

গত ৫ নভেম্বর বান্দরবানের রুমা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মুনলাই পাড়া ট্রেড সেন্টারে শান্তি কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে সরাসরি শান্তি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে এক সমঝোতা স্মরক অনুষ্ঠিত হয়। তারপর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় প্রথম ধাপে নিজ বাড়িতে ফিরেছে ১১টি পরিবার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘টাঙ্গুয়ার হাওরে টুরিস্ট পুলিশের তথ্যসেবা কেন্দ্র করা হবে’

বিয়ের ৫ বছর পর একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম

চবিসাসের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক কালবেলার জাহিদুল

প্রশিক্ষণার্থী নারীকে অপদস্থের পর ক্ষমা চাইলেন সেই কৃষি কর্মকর্তা

জাবি শিক্ষার্থীদের তথ্য ফাঁস; নেপথ্যে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক

‘ফটোগ্রাফার রাফিদের স্মরণে ফটোগ্রাফি কনটেস্ট আয়োজন করা হবে’

তেলের ডিপোর ট্যাংকে আটকে শ্রমিকের মৃত্যু

অনির্বাচিত সরকার সব কিছুর সমাধান করতে পারে না : যুবদল সভাপতি

ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে সচেষ্ট সরকার : আইসিটি সচিব

রাজউকের সার্ভারে ঢুকে ভবনের অনুমোদন করিয়ে নিয়েছিল হ্যাকার নিজেই

১০

সরাসরি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পেলেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউট ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা

১১

জুলাই ঐক্যের বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১২

অধ্যাপক ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ : নাহিদ ইসলাম

১৩

এবার আসিফ ও মাহফুজের পদত্যাগ দাবি গণঅধিকার পরিষদের

১৪

শীতের শুরুতে স্থানীয় নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন

১৫

ডাকসুর রোডম্যাপ দাবিতে ৩২ ঘণ্টা ধরে অনশনে বিন ইয়ামিন

১৬

বই চুরির মামলায় অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার গ্রেপ্তার

১৭

বন্যা না আসতেই ধসে গেল নদী রক্ষা বাঁধ

১৮

বর্তমান পরিস্থিতিতে মির্জা গালিবের ৫ পরামর্শ

১৯

পাকিস্তানকে বিশাল বাঁধ নির্মাণ করে দিচ্ছে চীন

২০
X