১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। দিবসটির সুচনালগ্নে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামবে এবং ফুলে ফুলে ভরে উঠবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে নাম না জানা লাখো শহীদদের স্মরণে ফুল দিয়ে শদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ লাখো জনতা। ইতোমধ্যে ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ধোয়ামোছা ও প্রস্তুতির জন্য জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ রয়েছে স্মৃতিসৌধে। শেষ হয়েছে, সকল প্রস্তুতির কাজ।
মহান স্বাধীনতা আর বিজয়ের স্মারক জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনে দেওয়া জাতির বীর সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। লাখো মানুষের ফুলে ফুলে ভরে উঠবে শহীদ বেদি। সেই আয়োজনের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহীদ বেদিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হবে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা। বিউগলে বাজবে করুন সুর। উত্তোলন করা হবে জাতীয় পতাকা। নিবিড় পর্যবেক্ষণ ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে স্মৃতিসৌধের ভেতরে ও বাইরের এলাকা। থাকছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে সাভার উপজেলা প্রশাসনও। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। জাতি গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাবে নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
এদিকে বিজয় দিবসের একদিন আগেই জাতীয় স্মৃতিসৌধের সব ধরনের কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। স্মৃতিসৌধের ফটক থেকে মিনার পর্যন্ত পুরো এলাকা ধুয়েমুছে চকচকে করা হয়েছে। সৌধ চূড়া পরিষ্কার করার কাজ শেষ। লেকও পরিষ্কার করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে লাল-সবুজ আলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। এখন চলছে নবম পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্বে তিন বাহিনীর সদস্যরা কুচকাওয়াজের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
এ ব্যাপারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ লাখো মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধকে দেড় মাস ধরে আমাদের প্রায় দেড়শো কর্মী ও দুটো প্রেশার মেশিন দিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার ও রঙতুলির আঁচড় এবং নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি আগামীকাল স্মৃতিসৌধে আগত সকল দর্শনার্থীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ ও যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এখানকার পুলিশ ও আনসার ক্যাম্পকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে রাখা হয়েছে। আমাদের আশা সবাই একটি সুন্দর এবং উপভোগ্য বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারবেন।
নিরাপত্তার ব্যাপারে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পুরো সাভার উপজেলা জুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সৌধ এলাকাসহ মহাসড়কে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া সৌধ এলাকার চারদিকে কয়েকশ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।
মন্তব্য করুন