ধান ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি কৃষক। ধান কেনার সময় ধান শুকালে ওজন কমে যাওয়াসহ নানা অজুহাতে ওজনে হেরফের করছেন তারা। নিয়ম অনুযায়ী ৪০ কেজিতে ধানের মণ হলেও ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা কৃষকদের কাছ থেকে ৪২ কেজিতে এক মণ হিসেবে ধান কিনছেন। কৃষকরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা 'ঢলতা' হিসেবে প্রতি মণে ২ কেজি ধান বেশি নিচ্ছেন। যার দাম কৃষকরা পাচ্ছেন না। এতে হয়রানি ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকরা।
তবে আড়তদার সমিতি বলছেন, সমিতির আওতাভুক্ত আড়তদারদের বাড়তি ওজনে ধান না কেনার নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে ফড়িয়ারা এই নির্দেশনা মানছেন না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের বাজার মনিটরিং না থাকায় ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে মনে করেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ হাজার ৯৬৫ টন ধান। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি মাঠে ধান কাটা ও মাড়াই এখন প্রায় শেষের দিকে। বাজারে প্রকারভেদে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের কৃষক সুলতান মাহমুদ সুজন বলেন, ৪০ কেজি ধানে এক থেকে দেড় কেজি করে বেশি নিয়েছেন আড়তদার ও ফড়িয়ারা। বেশি না দিলে তারা ধান নিতে চান না। একই অভিযোগ করেন উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস ছালাম।
উপজেলার পাগলা বাজার এলাকার আড়তদার নুরনবী হোসেন জানান, ধান অপরিষ্কার ও বালু থাকার কারণে মণে এক থেকে দেড় কেজি বেশি নেওয়া হয়।
উপজেলার কোতোয়ালিবাগ, রতনপুর, আটাপাড়া ও শালাইপুর বাজারের একাধিক আড়তদার বলেন, মিলাররা ধান নেওয়ার সময় ৭০ কেজিতে ১ কেজি ধান বেশি নেয়। সে কারণে আমাদেরও নিতে হয়।
উপজেলা আড়তদার সমিতির সভাপতি আইনুল হক বলেন, প্রচলিত ওজনের বাড়তি ওজন নিয়ে ধান না কিনতে সব আড়তদারকে নিষেধ করা আছে। কিন্তু উপজেলার বাইরে থেকে কিছু ফড়িয়া এসে আমাদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাজার দরের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে মণপ্রতি দুই কেজি ধান বেশি নিচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রতারিত হচ্ছেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, এ ব্যাপারে কোনো কৃষক লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন হাটবাজারে মনিটরিং করা হবে।
মন্তব্য করুন