বরিশাল-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের একে ফাইয়াজুল হক রাজুর মিছিলে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় অন্তত ৪০ নেতাকর্মী আহত ও ১২টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু। এদিকে হামলার বিষয়টি পুলিশ স্বীকার করলেও আহত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।
শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নাতি ফাইয়াজুল ঘটনার বর্ণনায় বলেন, উপজেলার বাইশারী গ্রামে দুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঈগল প্রতীকের পক্ষে মিছিল করছিলেন তার কর্মীরা। মিছিলটি বাইশারী কলেজের উত্তর পাশে পৌঁছালে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা ও তার ছোট ভাই উদয়কাঠি ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ আহম্মেদ ননী অস্ত্র-লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। তারা ঈগলের কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি করে এবং এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এতে অন্তত ৪০ কর্মী আহত হয়। পরে হামলাকারীরা ১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে এবং চারটি ভেঙে ফেলে।
এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তারা কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাও দেখব।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে। এ হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ভঙ্গ করেছে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা। এরা কীভাবে আওয়ামী লীগের নেতা হয়।
ফাইয়াজুল বলেন, আমার দাদা ছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। তার বাবা ফায়জুল হক আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। তাদের ওপর এ হামলা মেনে নেওয়া যায় না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার বাইশারী থেকে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ফাইয়াজুল হকের কর্মীরা ৩০-৩৫টি মোটরসাইকেলে মিছিল নিয়ে ইলুহারের উদ্দেশে রওনা দেয়। বাইশারী কলেজের সামনে সানা-ননীর নেতৃত্বে শতাধিক লোক মিছিলে হামলা করে। তারা মিছিলে থাকা লোকজনের ওপর পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে এবং এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে বিজিবি সদস্যরা এলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বানারীপাড়া থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ১২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; ৪টি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বা তার কর্মীরা কেউ আহত হয়েছেন কি না জানি না।
বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, ১২টি মোটরসাইকেল পোড়া ও ৪টি ভাঙা অবস্থায় পেয়েছি। তবে গুলির কোনো আলামত পায়নি। এ ঘটনায় দ্রুত মামলা করে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা ও উদয়কাঠি ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ আহম্মেদ ননীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।
বরিশাল-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন (নৌকা প্রতীক), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নকুল কুমার বিশ্বাস (গামছা প্রতীক), তৃণমূল বিএনপির মো. শাহজাহান সিরাজ (সোনালি আঁশ), ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির এনপিপির সাহেব আলী (আম), স্বতন্ত্র মো. মনিরুল ইসলাম (ঢেঁকি)। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল) ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
মন্তব্য করুন