শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে সাত ছাত্রলীগ নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। দুপুরে ওই বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে।
শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে ওই সাত ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি দিয়ে ঊর্ধ্বতন কমিটির কাছে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল জেলা ছাত্রলীগ। সুপারিশ অনুযায়ী অব্যাহতি পাওয়া ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া ছাত্রলীগ নেতারা হলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত মাদবর, সদস্য তন্ময়, সরকারি এম এ রেজা কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি আসিফ শিকদার, পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সঞ্জু, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক রোহান দেওয়ান, ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হান খান, ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার মৃধা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থি, অপরাধমূলক ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগ তাদের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে অব্যাহতি প্রদান করে।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. মহসিন মাদবর কালবেলাকে বলেন, নির্বাচনের দিন ভোট গণনা শেষে ভেদরগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের অফিসে বসেছিলেন। তখন প্রায় ১৫ থেকে ২০ ব্যক্তি এসে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের ওপর অতর্কিত হামলা করে। হামলাকারীদের মধ্যে যারা ছাত্রলীগের পদধারী, তাদের আমরা অব্যাহতি দিয়ে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে সুপারিশ করেছি। জেলা ছাত্রলীগের সুপারিশের আলোকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করায় জেলা ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগ সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল সংগঠন। এই সংগঠনে কোনো গুণ্ডা-বদমাসের জায়গা নেই।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত মাদবরের সঙ্গে সরকারি এম এ রেজা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের বিরোধ চলছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন (৭ জানুয়ারি) ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আবু জাফর আশিক, সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা সুমন মুন্সী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোরসালিন হাওলাদারের ওপর প্রান্ত মাদবরের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের গ্রুপ এসে হামলা করে তাদের মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে। পরে আহতদের উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পরে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন