রংপুর (পীরগাছা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:১৪ এএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:১৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

একটি হুইল চেয়ারের আকুতি প্রতিবন্ধী সিয়ামের

নানির কোলে প্রতিবন্ধী সিয়াম। ছবি : কালবেলা
নানির কোলে প্রতিবন্ধী সিয়াম। ছবি : কালবেলা

রংপুরের পীরগাছার হতদরিদ্র একরামুল ও ইসমোতারা দম্পতির ঘরে আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে জন্ম নিয়েছিল একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। বাবা-মা আদর করে নাম রাখেন সিয়াম। কিন্তু জন্মের পর কয়েক মাস যেতে না যেতেই সেই মা-বাবা যখন বুঝতে পারেন তাদের সন্তানটি শারীরিক প্রতিবন্ধী এরপরই তাকে নানি ফাতেমার কাছে রেখে এসে স্বামীর সংসার করতে থাকেন মা ইসমোতারা।

একে তো শিশুটির ভাগ্যে জুটেনি বাবা-মায়ের আদর, তার ওপর পায়নি ভালো কোনো চিকিৎসা। ভাগ্যের এই নির্মম পরিহাসের মধ্যেই বড় হচ্ছে সিয়াম। প্রতিবন্ধী ভাতার সামান্য কিছু টাকা পেলেও এখন একটা হুইল চেয়ারের আকুতি তার।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার চর তাম্বুলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, শিশু সিয়াম একটি ভাঙা প্লাস্টিক চেয়ারের হাতলের ফাঁকে পা ঝুলিয়ে মাথা গুঁজে বসে আছে। এ সময় তার সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায় শারীরিক প্রতিবন্ধিতার পাশাপাশি সে অনেকটা মানসিক প্রতিবন্ধীও। শারীরিক ও মানসিক এত অক্ষমতার মধ্যেও সে তার নাম, বাবা-মার নাম, সালাম, সুরা ফাতিহা, কী খেতে সে পছন্দ করে এগুলো অস্ফুষ্ট স্বরে বলতে পারে। তার সঙ্গে বিভিন্ন কথাবার্তার মধ্যে সে জানায়, তারও অন্যান্য বাচ্চাদের মতো বাবা-মার আদর পেতে ইচ্ছে করে। হাঁটতে-খেলতে ইচ্ছে করে। মাছ-মাংস খেতে ভালো লাগে তার।

এ সময় সিয়ামের নানি ফাতেমা বেগম কালবেলাকে বলেন, আমরা খুব গরিব। আমার স্বামী অটো চালায়। আমার ৩ ছেলে, ১ মেয়ে। মেয়েটার বিয়ে দিয়েছি। এই সিয়ামসহ তার ৪টি সন্তান। মেয়ের জামাইও অটো চালায়। তাদেরও খুব অভাব। সিয়াম প্রতিবন্ধী হওয়ায় ও অভাবের কারণে আমার কাছে রেখেছে। আমি শিশুকাল থেকে ওকে কোলে-পিঠে করে বড় করছি। সে কোনো কাজ নিজে করতে পারে না। আমারও এখন বয়স হয়েছে। সিয়ামের ওজন বেড়ে যাওয়ায় তাকে কোলে করে সব কাজ করানো আমার জন্য খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি হুইল চেয়ারের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে আবদার করলেও এখনও পর্যন্ত একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা কেউ করে দেয়নি। অভাব অনটনের কারণে নাতিটাকে ভালোমন্দ কিছু খাওয়াতে পারি না।

সিয়ামের প্রতিবেশী মামা আমিনুল ইসলাম বলেন, সিয়াম সারা দিন বাড়ির বাইরে বসে থাকে। অনেক সময় চেয়ার থেকে পড়ে যায়। ধুলায় গড়াগড়ি করে। এতবড় একটা বাচ্চাকে সবসময় কোলে করে চলাফেরা করাতে আমার চাচির খুব কষ্ট হয়। একটি হুইল চেয়ার হলে সিয়াম ও তার নানির কষ্ট কিছুটা লাঘব হতো।

এ বিষয়ে স্থানীয় তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল কালবেলাকে বলেন, প্রতিবন্ধী সিয়ামকে আমি দেখেছি। খুব শিগগিরই তার জন্য জন্য একটা হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা আমি করে দিব।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. এনামুল হক কালবেলাকে বলেন, এ মাসে কিছু হুইল চেয়ার বরাদ্দ আসবে। সেখান থেকে সিয়ামকে একটি চেয়ার দেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সুখবর পেলেন যুবদল নেতা

পটকা ফুটানো নিয়ে রাতে সংঘর্ষে জড়াল দুই মহল্লার বাসিন্দারা

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ যা জানা গেল

কনটেন্ট ক্রিয়েটর আল-আমিনের সর্বশেষ অবস্থা

বিজয়ের মাস উদযাপনে ঢাবি প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ জাতীয় ছাত্রশক্তির

গুজবে কান না দিয়ে খালেদা জিয়ার সুস্থতায় দোয়া করুন : ইশরাক

শেরপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মনি গ্রেপ্তার

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফরিদপুরে কর্মসূচি

এখনো ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি তারেক রহমান : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাবির তিন শিক্ষক বরখাস্ত, ছাত্রত্ব বাতিল দুই শিক্ষার্থীর

১০

‘চশমা’ প্রতীকে নির্বাচন করবে আট দলের শরিক জাগপা

১১

মানুষের অধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়া সব সময় আপসহীন : মাসুদুজ্জামান

১২

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ওমরাহ পালন

১৩

সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারল না ভারতকে, সমতায় সিরিজ

১৪

মাদকাসক্ত ছেলের আগুনে পুড়ল বসতঘর

১৫

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় হাসপাতালে চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল

১৬

মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

১৭

শরীয়তপুরে খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় মিলাদ ও দোয়া

১৮

পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের যে দাবি

১৯

সন্তানহারা মা কুকুরটিকে দেওয়া হলো দুটি নতুন ছানা

২০
X