কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১০ পিএম
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিলুপ্তির পথে মহিষ পালন

মহিষের দল
খোলা বিলে চরে বেড়াচ্ছে মহিষের দল। ছবি : কালবেলা

একটা সময় গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে পারিবারিক খামারে মহিষ পালতে দেখা যেত। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বিলে দেখা যেত মহিষের পাল। দলবেঁধে খাওয়া আর বিলকে মাতিয়ে রাখাই ছিল মহিষের কাজ। গ্রামের মধ্যে যাদের জমি বেশি থাকত তাদের মহিষও বেশি থাকত। মহিষের দুধ আর মাংসের জন্য লালন-পালন করত তখনকার কৃষকরা।

হালচাষের জন্য ছিল মহিষের আলাদা কদর। সময়ের পরিবর্তনে এখন আর চোখেই পড়ে না মহিষ পালন। দলবেঁধে ঘুরতে দেখা যায় না বিলে। বর্ষা মৌসুমে হালচাষে নেই মহিষের উপস্থিতি। দুধ আর মাংসের জন্য বিখ্যাত হলেও এখন আর নেই এসবের সহজলভ্যতা। হারিয়ে যেতে বসছে ঐতিহ্যের মহিষ পালন।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবারে বাবা-দাদার পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। একদিকে মহিষের খাদ্য সংকট অন্যদিকে গ্রামগঞ্জের খাল দখলে পানি না থাকায় একেবারে হারিয়ে যেতে বসেছে মহিষ পালন।

কৃষকরা জানান, একটা সময় আমরা বিলে মহিষ ছেড়ে দিয়ে লালন-পালন করতাম। পুরো খালে বিলে পানি আর ঘাসে পরিপূর্ণ থাকত। রোগ বালাই কম হতো। বিশেষ করে হালচাল করার প্রধান মাধ্যম ছিল মহিষ। সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা হালচাষ করা যেত। তখনকার সময় পাওয়ার টিলার ছিল না। খরচ লাগত কম হালচাষে। এখন আর মহিষ দিয়ে কেউ হালচাষ করে না। আমরা যারা মহিষ পালন করি তারা খুব কষ্টে আছি। খাবার, পানি, চিকিৎসা সব মিলিয়েই সংকট। হয়তো কয়েক বছর পর কেউ মহিষ পালন করবে না।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. জাকির হাওলাদার বলেন, আমাদের একটা সময় ৬০ থেকে ৭০টি মহিষ ছিল। এ গ্রামে অনেকেই মহিষ পালন করত। এখন আমাদের পরিবারে ২০টির মতো মহিষ আছে। খাবার, পানির অভাবের কারণে মহিষ পালন করা যায় না। মহিষের খাবার কিনে খাওয়ানো সম্ভব নয়। প্রতিদিন ২ মণ খাবার ও ১ মণ পানির প্রয়োজন হয়। এখন আর মহিষ দিয়ে হালচাষ হয় না। সব মিলিয়ে বিলুপ্তপ্রায় এ মহিষ জাতটি।

পশু চিকিৎসক আবু সাইদ জানান, নীলগঞ্জ ইউনিয়নে হাতে গোনা ৩-৪টা পরিবারে দেখা যায় মহিষ পালন। তবে খাদ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজলভ্য হলে আগ্রহ বাড়ত কৃষকদের।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল হক সরদার বলেন, মহিষ পালন একেবারে কমে যাচ্ছে ধারণা ভুল। কলাপাড়া উপজেলায় দুটি উৎপাদন গ্রুপ আছে। প্রত্যেক গ্রুপে ৪০ জন সদস্য আছে। কলাপাড়া উপজেলায় প্রায় ১৩ হাজার মহিষ আছে যা পারিবারিক খামারে বেড়ে উঠছে। তবে খাদ্য সংকট আছে। আমরা মুজিব কিল্লায় ও পরিত্যক্ত জঙ্গলে ঘাস উৎপাদন করা যায় কিনা এটার ব্যপারে পদক্ষেপ নেব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পিএসজি না ইন্টার—কাকে মুকুট পরাবে ইউরোপ?

২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরামের ২২ বছরপূর্তি

হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

জিয়াউর রহমানের সমাধীতে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ শ্রদ্ধা 

মাদকদ্রব্য বিক্রিতে বাধা, কালবেলার সাংবাদিকের ওপর হামলা

প্রযুক্তির স্থানান্তরে গবেষক-কৃষকদের মধ্যে সমন্বয় জরুরি : খুবি উপাচার্য

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন / ট্রাম্পের উপদেষ্টা থাকাকালে নিয়মিত মাদক নিতেন ইলন মাস্ক

পাকিস্তানে জেলা প্রশাসককে খুন করল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা

শেষ টি-টোয়েন্টি থেকে ছিটকে গেলেন শরীফুল

ঈদের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে

১০

সারা দেশে অতি ভারি বৃষ্টির আভাস

১১

কমল জ্বালানি তেলের দাম 

১২

শিল্পীদের হঠাৎ গ্রেপ্তার ও মামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ আবুল হায়াত

১৩

ঐক্য নেই বরিশাল বিএনপিতে : সরোয়ার

১৪

আইসিসির নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ

১৫

ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে ৪ ফ্লাইট গেল চট্টগ্রামে 

১৬

অপসংস্কৃতি বিবেকের দরজায় তালা লাগায় : কাদের গনি চৌধুরী 

১৭

ফারুকের অপসারণে মুখ খুললেন হাথুরুসিংহে

১৮

আসলে আমরা মানুষ চিনতে ভুল করেছি : গয়েশ্বর

১৯

বেকারত্ব কমাতে ফিরতে হবে শহীদ জিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে : চসিক মেয়র

২০
X