প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর মাছ বাজারে জাটকা সংরক্ষণ নিষেধাজ্ঞার ব্যানারের সামনেই প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন জাটকা ইলিশ। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে দাবি সচেতন মহলের।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাটকা ইলিশ রক্ষায় গত ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত নদীতে জাটকা মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই ৮ মাস জাটকা পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে পালেরচর বাজারে জাটকা ও ইলিশের পোনাসহ ছোট টেম্পু ইলিশ প্রকাশ্যে বিক্রি করতে দেখা যায়। তারা নির্বিঘ্নে ও প্রকাশ্যে বিক্রি করছে জাটকা ইলিশ। এভাবে বিক্রি করতে দেখে সচেতন মহল হতভম্ব হয়ে যান। এভাবে অবাধে প্রকাশ্যে জাটকা বিক্রি বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে মাছের আড়তে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে উপজেলার পালেরচর বাজারের আড়তগুলোতে দেদারছে জাটকা কেনাবেচা চলছে। প্রতি কেজি জাটকা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদী থেকে প্রতিনিয়ত জেলেরা জাটকা ধরে বিভিন্ন আড়ৎ ও স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। এভাবেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার পালেরচর মাছ বাজারে জাটকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য বিভাগ বা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, মাছ শিকার ছাড়া বিকল্প কোনো কাজ না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই জাটকা শিকার করতে হয়।
মাছ বিক্রেতা শহর মাদবর কালবেলাকে বলেন, জাটকা আড়তে আসে বলেই আমরা কিনে বিক্রি করি। এখানে আমাদের দোষের কিছু নেই। আড়তদাররা যদি জাটকা আনা বন্ধ রাখেন তাহলে আমরাও জাটকা ইলিশ বিক্রি বন্ধ রাখবো।
জাটকা ক্রেতা হাবিবুর কালবেলাকে বলেন, বড় ইলিশ মাছের দাম বেশি তাই কম দামে জাটকা ইলিশ কিনেছি। নিয়মিত এই বাজারে জাটকা পাওয়া যায়। উপার্জন কম তাই জাটকা কিনছি। প্রশাসন যদি জাটকা ধরা বন্ধ করে দিতে পারে তাহলে বিক্রিও বন্ধ হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল শরীফ কালবেলাকে বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। গত কয়েক দিন আগেও ২০ কেজি জাটকা জব্দ করেছি। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
জাজিরা মাঝিরঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, পালেরচর বাজারে জাটকা বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়েছি। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে জেল জরিমানা করছি। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন