জিন দিয়ে সমস্যা সমাধানের কথা বলে হাজারো মানুষকে প্রতারিত করছেন এক কবিরাজ। রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় এ প্রতারক কবিরাজের সন্ধান পাওয়া গেছে। কালুখালীর বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে ওই প্রতারক কবিরাজের আস্তানা। প্রতারক কবিরাজের নাম লাইলী বেগম। তিনি ভবানীপুরের মিরাজ আলীর স্ত্রী।
সপ্তাহের দুই দিন, শনি ও মঙ্গলবার কবিরাজ লাইলী বেগম রোগী দেখেন। রোগ ভেদে তাকে দিতে হয় চিকিৎসার ফি। যাবতীয় রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি বিশেষ করে বন্ধ্যাত্ব, বশীকরণ জিনেধরা, টিউমার, গ্যাস্টিক, আলসার, জাদুটোনা, বান, সংসারে অশান্তি- এসব চিকিৎসার জন্য লাইলী কবিরাজের ফি ৩-৪ হাজার টাকা।
এছাড়া ১ কেজি চিনি, ১ কেজি সরিসার তেল, আধা কেজি মরিচ, ১টি মোরগ, ২শ গ্রাম জিরা, আধা কেজি লবণ, ২ কেজি দুধসহ প্রায় ২৫ প্রকার উপকরণ লাগে লাইলীর চিকিৎসা ব্যয়। এছাড়াও ওরশের নামে দিতে হয় ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগি এবং আরও অনেক কিছু। তবে লাইলী বেগমের এসব চিকিৎসায় ভালো হয়েছে এমন কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ কারো কোনো উপকার হয় না। এটা এক ধরনের প্রতারণা ও ভণ্ডামি।
কুষ্টিয়ার মোল্লা তেঘরিয়া থেকে আসা স্কুলছাত্রী সুমাইয়া সিমু টিকটকে আসক্ত হওয়ার অপরাধে তার নানি কুলসুম তাকে কবিরাজের কাছে আনে। কবিরাজ লাইলী বলেছে ওকে জিনে ধরেছে। ৩ হাজার টাকা আর লাল মোরগ দিলেই জিন ছাড়িয়ে দিব।
চরচিলকা গ্রামের রুবিনা জানায়, বন্ধ্যাত্ব ভালো করার জন্য কবিরাজ আমার ৫ হাজার টাকা নিয়েছে ৭ মাস আগে কিন্তু কাজ হয়নি।
বালিয়াকান্দি উপজেলার আনন্দবাজার থেকে আসা ছকিনা জানান, গ্যাস্টিক চিকিৎসার জন্য কবিরাজ লাইলী বেগমকে ১৫ দিন আগে ২ হাজার টাকা দিয়েছি। রোগ ভালো হয়নি। টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।
কবিরাজি বিদ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে লাইলী বেগম জানান, আমার কোনো শক্তি নেই, জিনে ভালো করে তাই ভালো হয়। অনেক ডিসি, এসপি, মিলিটারি আমার দরবারে চিকিৎসা নিতে আসেন। মানুষ প্রতারিত হলেও প্রতারণা চিকিৎসার অর্থ দিয়ে লাইলী বেগম গড়ে তুলেছে একতলা ভবন। এ নিয়ে কেউ কিছু লেখালেখি করলে পুড়ে ছারখার হবে। গোখরা সাপে কামড় দিবে বলে সংবাদকর্মীদের ভয় দেখায় লাইলী।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইশরাত জাহান উম্মন জানান, এ ধরেনর চিকিৎসা অবৈজ্ঞানিক। মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে কেউ এ ধরনের প্রতারণা করলে তা বন্ধ করতে হবে।
মন্তব্য করুন