উপকূলীয় (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাহাড়ের জব্দকৃত বালু বিক্রি করলেন রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিব

অভিযুক্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক। ছবি : কালবেলা
অভিযুক্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক। ছবি : কালবেলা

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হকের বিরুদ্ধে জব্দকৃত পাহাড়ের বালু বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা সংগ্রামের জুমে পাহাড় কেটে দুটি বিশাল বালুর স্তূপ তৈরি করে। স্থানীয় আবদুল জলিল ও রমিজ পাড়া এলাকার শাকের উল্লাহর নেতৃত্বে একটি বালুখেকো সিন্ডিকেট এ স্তূপ করে। এ সময় উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে প্রায় দশ লাখ ঘনফুট বালু জব্দ করে বনবিভাগের জিম্মায় দেয়। সাড়ে তিন বছর পর বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক জনৈক শাকের উল্লাহ ও আবদুল জলিলকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে এ বালু বিক্রি করে দিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।

টৈটং বনকানন এলাকার বাসিন্দা ও সমাজকর্মী জাকের হোসেন বলেন, ২০২০ সালের শেষের দিকে তৎকালীন ইউএনও সংগ্রামের জুম এলাকার পাহাড় কাটা বালুর দুটি স্তূপ জব্দ করে বনবিভাগের জিম্মায় দিয়েছিলেন। এ বালুগুলো ২০২৩ সালের শুরুর দিকে রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক ২০ লাখ টাকা দিয়ে একটি বালুখেকো সিন্ডিকেটকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। পরে দরদামে মিল না হওয়ায় এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পারায় তখন বিক্রি করা হয়নি। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেঞ্জার হাবিব ওই একই সিন্ডিকেটকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে বালুগুলো বিক্রি করে দিলেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল বলেন, পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংসকারীরা বালু উত্তোলন করবে। আবার সে বালু জব্দ করে চড়া দামে তাদের বিক্রি করবে বনবিভাগ। এতে প্রকাশ পায় পরিবেশ ও পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে গেলেও বনবিভাগের কিছু যায় আসে না। তাঁদের পকেট ভারী হলেই হয়। এমন রক্ষক সেজে বনের সম্পদ ভক্ষণ করা ব্যক্তিদের এসব দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অপসারণ জরুরি হয়ে উঠেছে। বন, পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পাহাড়-প্রকৃতি ধ্বংসের ইন্ধনদাতা যারাই হোক তাদের চিহ্নিত করে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

রেঞ্জ কর্মকর্তার জব্দকৃত পাহাড়ের বালু বিক্রির ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি পেকুয়ায় আসছি বেশিদিন হয়নি। জানতে পেরেছি টৈটং এর বনাঞ্চলে পাহাড় কাটা তিনটি বালুর বড় বড় স্তূপ ছিল। সরেজমিনে দেখতে পেয়েছি একটি। বাকি দুটি কোথায় গেল তা আমারও প্রশ্ন। তবে বিষয়টি যেহেতু বনবিভাগের সেহেতু আশা করি তারাই এটি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন, এগুলো স্থানীয় কিছু পাহাড়খেকোদের ষড়যন্ত্র। বালুর স্তূপগুলো কোথায় গেল- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি এখন কিছু বলতে পারব না। আমাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বনাঞ্চলের কোনো সম্পদ কেউ বিক্রি করার অধিকার নেই। যদি কেউ এমন কোনো কাজ করে থাকে তাহলে তা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা এ ব্যাপারটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেয়ামতের দিন যে ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্বয়ং মহান আল্লাহ বাদী হবেন

বাম চোখ লাফালে কী হয়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞ আলেম

২৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

লবণ নাকি চিনি, কোনটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?

হল ত্যাগের নির্দেশ, ঢাবিশিক্ষার্থীদের প্রতি তাসনিম জুমার যে অনুরোধ

ভূমিকম্প আতঙ্কে হল ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান ইডেন শিক্ষার্থীদের

৭ ঘণ্টা পর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় সংঘর্ষ, আহত অনেক

ক্যাম্প ন্যুতে বার্সার রাজকীয় প্রত্যাবর্তন

জনগণকে নিয়ে এলাকার কল্যাণে কাজ করব : রবিন 

১০

দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ৭৬ ক্লাবকে নিয়ে কোয়াবের চা-চক্রের আয়োজন

১১

ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাবি ভিসির বাসভবনের সামনে শুয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা

১২

এবার নিজেদের মাঠে নাস্তানাবুদ লিভারপুল

১৩

ভূমিকম্পে নিহতদের সম্পর্কে যা বলেছেন নবীজি (সা.)

১৪

তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কোরআন বিতরণ 

১৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা, হল ত্যাগের নির্দেশ

১৬

সিমেন্ট কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ, ৬ শ্রমিক দগ্ধ

১৭

বাংলাদেশ সমাজকর্ম শিক্ষক সমিতির আত্মপ্রকাশ 

১৮

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও ইউনিভার্সেল মেডিকেলের স্বাস্থ্য চুক্তি

১৯

ভূমিকম্পে নিহত রাফিকে শেষ দেখা দেখলেন মুর্মূষু মা

২০
X