নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ছে জ্বর,ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সব বয়সের মানুষের কষ্ট হলেও এই গরম সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে বয়স্ক ও শিশুদের। উপজেলার হাসপাতালে ভর্তি রোগীর প্রায় ৬০ শতাংশই শিশু। এদের বেশির ভাগই ডায়রিয়ার রোগী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গেল ঈদুল ফিতরের পর হাসপাতালগুলোতে রোগীর প্রায় দ্বিগুণ ভিড় বেড়েছে। তাদের সিংহভাগই শিশুরোগী। সোমবার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ৮৫ জন পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে। এসব রোগীদের অধিকাংশই শিশু। যাদের বেশির ভাগই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। অন্য শিশুরা জ্বর, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। বহির্বিভাগে আরও শিশুর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালের দিকে সরজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ডায়রিয়া রোগী বেশি। টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রচণ্ড ভিড়। টিকিট নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন জরুরি বিভাগের সামনে। ওয়ার্ডের শয্যা, মেঝে, বারান্দা সবখানেই রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভিড়। তীব্র গরমের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যে কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। ভর্তি রোগীর পাশাপাশি গত কয়েকদিনে বর্হিবিভাগে অন্তত কয়েকশ মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন।
কামরুজ্জামান নামের এক শিশুর বাবা জানান, আমার শিশু মেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। তাকে নিয়ে আজ হাসপাতালে এসেছি। বার বার পাতলা পায়খানার কারণে ডাক্তার দেখিয়েছি।
রহিমা খাতুন নামের এক মহিলা বলেন, গরমের জন্য আমার স্বামীর শ্বাসকষ্ট বেড়েছে।ফলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ডাক্তার দেখিয়েছি। হাসপাতাল থেকে ঔষধ নিয়েছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.এবাদূর রহমান বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে মানুষদেরকে এই গরমে সচেতন হতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
তিনি বলেন, এ সময়ে শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুদের নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোনোভাবেই শিশুদের শরীর ঘামতে দেওয়া যাবে না। এজন্য তাদেরকে পাতলা কাপড় পরাতে হবে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় হাসপাতালে স্যালাইনসহ কোন ঔষধ সংকট নেই বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন