জামালপুর ইসলামপুরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন চলছে ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ। তবে ধানের দাম অনেক কম। বাজারে ৪০ কেজিতে মণ হিসাবে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে। এতে উপজেলার কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। লোকসানের গ্যারাকলে পড়েছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা।
উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের জারুলতলা গ্রামের কৃষক জুলফিকার আলী ভট্ট বলেন, ধান কাটা উৎসবে মনের আশায় বুক ভরে যায়। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে ধান বিক্রি করে অনেক কিছু খেতে মন চায়। তবে এভাবে সংসার চালানো যায় না। এক মণ ধান বিক্রি করেও এক কেজি গরুর মাংসও কেনা যায় না। ধান বিক্রি করে কামলা খরচ রাসায়নিক সার কিনে জ্বালানি তেল আর মেশিনের মালিকদের ঋণ দিতে দিতেই টাকা শেষ।
গুঠাইল বাজারে ২৫ মণ ধান বিক্রি করেন দেলীরপাড় গ্রামের সোহেল শেখ। তিনি বলেন, আমি ৪০ কেজি মণে ৭৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি করেছি। ঢলকের নামে মণপ্রতি ১ কেজি অর্থাৎ ২৫ মণ ধানে (২৫ কেজি) বেশি দিতে হয়েছে।
ঢলকের নামে প্রতি মণে ১ কেজি ধান বেশি নেওয়ায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
কৃষক বুলবুল মিয়া জানান, বাজারে ধান বিক্রি করতে গেলে তারা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কম বলে। মহাজনদের ঋণ পরিশোধ ও ধান কাটার খরচ মেটাতে আমাদের বর্তমানে লোকসানে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।
ঢলকের নামে ১ কেজি ধান বেশি নেওয়ার প্রথারও বিলুপ্তি চান কৃষকরা। তারা বলেন, নানা শর্তের বেড়াজালে সরকার ঘোষিত নির্ধারিত মূল্যে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারেন না। তাই আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠপর্যায়ে অস্থায়ী সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র করে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি কাঁচা ধান কেনার দাবি জানান তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার এ এল এম রেজুওয়ান বলেন, ইসলামপুর উপজেলায় ১৭২৮০ হেক্টর ফসলের জমিতে ধানের চাষ করা করেছে, ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে কৃষি শ্রমিকের দাম চড়া থাকায় কৃষকদের ধান গোলায় তুলতে খরচ বেশি পড়েছে। ধানের দাম কম থাকায় বর্গাচাষিরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন।
মন্তব্য করুন