ঘূর্ণিঝড় রিমালের রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জে সোনাতলী ব্যাংক শাখায় ডাকাতির চেষ্টা চালানো হয়েছে। মুখোশধারী একদল ডাকাত ব্যাংক এলাকার নৈশপ্রহরীকে হাত-পা বেঁধে সামনের এক পরিত্যক্ত ভবনে ফেলে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা ব্যাংকের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই আনসার সদস্যকেও জিম্মি করে। পরে তারা ভল্ট ভাঙার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
গত সোমবার (২৭ মে) রাতে ডাকাতদল ওই ব্যাংকে হানা দেয়। আহত নৈশপ্রহরীকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোনালী ব্যাংক এলাকার নৈশপ্রহরী আব্দুর রহমান (৬০) জানান, সোমবার রাত ৮টার সময় তিনি কাজে যোগ দেন। দিনভর বৈরী আবহাওয়ার কারণে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত ২টার দিকে ৮ থেকে ১০ জনের মুখোশধারী একদল ডাকাত ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে জিম্মি করে টর্চ লাইট কেড়ে নেয় । সেখান থেকে ব্যাংকের পশ্চিমপাশের বিএডিসির পরিত্যক্ত ভবনে তাকে নিয়ে গিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে রেখে বাইরে বের হয়ে যায়। ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য নয়ন হোসেন (৩০) ও ফরহাদ হোসেন (৩২) জানান, ঝড়-বৃষ্টির কারণে তারা নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার গেটে তালা ঝুলিয়ে ব্যাংকের ভেতরে অবস্থান করছিলেন। বৈরী আবহাওয়ায় তাদের ঝিমুনি আসে। রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ গেটের তালা ভেঙে একসঙ্গে অন্তত ১০ জন লোক ভেতরে ঢোকে। তাদের প্রত্যেকের হাতে ধারালো অস্ত্র এবং মুখোশ পরা ছিল। তারা ভেতরে ঢুকেই অস্ত্রের মুখে দু’জনকে জিম্মি করে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর তাদের মেঝেতে শুইয়ে রেখে ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করে। দীর্ঘসময় চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়ে তাদের (আনসার) কাছে এসে দু’জনের দুটি মোবাইল ফোন এবং শরীর তল্লাশি করে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শাহাদত হোসেন সিরাজ জানান, ভোরের দিকে ব্যাংক এলাকার নৈশপ্রহরী কৌশলে মুখের কাপড় খুলে চিৎকার শুরু করেন। এলাকার লোকজন তার চিৎকার শুনতে পেয়ে সেখানে পৌঁছে তাকে প্রথমে উদ্ধার করেন। এরপর তারা ব্যাংকের দরজা খোলা দেখে ভেতরে ঢুকে দুই আনসার সদস্যকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পান।
তিনি বলেন, বড় ধরনের কোনো ক্ষতি না হলেও বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তানভীর হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সোমবার দিনভর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এ কারণে ব্যাংকসহ আশপাশে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করেনি। তারপরও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারাই এর সঙ্গে জড়িত থাক, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন