সাতক্ষীরার আশাশুনির মানিকখালী ব্রিজের টোল আদায়ের ৩ বছরের ব্যবধানে ৬ গুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাড়তি অর্থে টোল প্রাপ্তি হলে প্রকৃত অর্থে পরোক্ষভাবে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে এমনটাই দাবি উপজেলাবাসীর।
নতুন করে টোল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ইজারাদার নিয়োগে দর উঠেছে ১ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। যা বিগত বছরের চেয়ে সাড়ে ৬ গুণ বেশি। সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়ার মুক্তি কনস্ট্রাকশন ১ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার দরপত্র দাখিল করেছেন। সে কারণে সাধারণ মানুষকেই এই বর্ধিত অর্থ ব্যয় করতে হবে ভেবে উপজেলাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, মানিকখালী ব্রিজের টোল আদায়ের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫, ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য ইজারাদার নিয়োগের কোটেশন ওপেনিংয়ের পঞ্চম কলের নির্ধারিত দিন ছিল বৃহস্পতিবার ২০ জুন। এতে দুটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়ার মুক্তি কনস্ট্রাকশন ১ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার দরপত্র দাখিল করেছে। এ ছাড়া মেসার্স অসীমা এন্টারপ্রাইজ ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার দরপত্র দাখিল করেছে। নিয়মানুযায়ী সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়ার মুক্তি কনস্ট্রাকশন সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারাদার নিয়োগ পাওয়ার কথা।
এদিকে, ১ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা দর ওঠায় চিন্তায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। যেখানে মানিকখালী ব্রিজের টোল আদায়ের বিগত ৩ বছরের ইজারাদারের সর্বোচ্চ দর ছিল প্রায় ২০ লাখ টাকা, সেখানে মাত্র ৩ বছরের ব্যবধানে তা ছয় গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষকেও ৬ গুণ বেশি হারে টোল দিতে হবে বলে চিন্তায় পড়েছেন তারা।
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকিম কালবেলাকে বলেন, এমনিতেই মানুষ মানিকখালী ব্রিজের টোল দেওয়া নিয়ে অসন্তষ্ট। তার ওপর নতুন অর্থবছরে ছয় গুণ বেশি হারে টোল আদায় করা হলে সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে নষ্ট হতে পারে। ইজারাদার যাতে টোল আদায়ে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন না করে সে বিষয়ে অবশ্যই সড়ক ও জনপথ বিভাগকে তদারকি করার দাবি জানান তিনি।
এ বি এম মোস্তাকিম আরও বলেন, টোল থাকতে হবে মানুষের সাধ্যের মধ্যে। অন্যথায় আমরা উপজেলাবাসী এটা মেনে নেব না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্যোগকবলিত আশাশুনিবাসীর জন্য মানিকখালী ব্রিজটি টোলমুক্ত ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ বলেন, দুপুর ২টায় কোটেশন ওপেন করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে মুক্তি কনস্ট্রাকশন ১ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার দরপত্র দাখিল করেছে। এ ছাড়া মেসার্স অসীমা এন্টারপ্রাইজ ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার দরপত্র দাখিল করেছে। আমরা এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কোনো প্রতিষ্ঠান ইজারাদার নিয়োগ পাচ্ছে। তবে, ইজারাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দরদাতারাই নিয়োগ পান।
মন্তব্য করুন