সিলেটের বিশ্বনাথে বন্যাকবলিত ১১ পরিবারের প্রায় অর্ধশত মানুষ আশ্রয় পায়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে বন্যাকবলিত উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের চকরামপ্রসাদ গ্রামের পরিবারগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিতে এলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন অর্ধশত বন্যার্ত মানুষকে আশ্রয় না দিয়ে পানি, বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ ও বাথরুমের তালা মেরে চলে যান।
পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কাদিপুর শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় এই পরিবারগুলো। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
আশ্রয় নেওয়া নিপা বেগম, নিবন্ধ বিকাশ দাশ ও বাহার বেগম জানান, তাদের ঘরে পানি উঠায় তারা পরিবার নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেলোয়ার সুমন এসে বিদ্যুৎ, পানি, বাথরুম বন্ধ করেন এবং তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। তারা তাৎক্ষণিক স্থানীয় ইউপি সদস্যের সাহায্য নিলে তিনিও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার সরেজমিন গিয়ে তাদের পাশের কাদিপুর শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেন। পরে তাদের শুকনো খাবারও দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে তাদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী ও গো-খাদ্য বিতরণ করেন ইউএনও।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয় জানাজানি হলে ফুঁসে উঠে এলাকার জনসাধারণ। শুক্রবার দুপুর ২টায় স্থানীয়রা হাসপাতালের সামনে আন্দোলনের ডাক দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান সুইট সরেজমিন গিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আফিজ আলী বলেন, ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমনকে আমি অনেকভাবে বলেছি, কিন্তু তিনি আমার কথা শুনেননি।
তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের বন্যায় ২০টি পরিবার এই উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন বলেন, আমার ওপর আনীত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোকে পাশের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করেছি। কারণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন। তারা গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, এ বিষয়ে আমার কেনো কিছু জানা নেই।
মন্তব্য করুন