ক্যানসারে মৃত্যু হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হক জিমির। কিন্তু এই যুদ্ধে হারের আগে শুধু আর্থিক সাহায্যের আবেদনে, একটি স্বাক্ষরের আশায় তাকে লড়াই করতে হয়েছে দীর্ঘ ৫ মাস। তবুও মেলেনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সাক্ষাৎ ও তার স্বাক্ষর।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে ৫ দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (০৩ মে) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলনে দাবি আদায়ে আগামী ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, জিমির চিকিৎসার জন্য তার পরিবার অর্থ সংকটে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে একাধিকবার আবেদন করেও উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
তারা আরও বলেন, প্রায় ৫ মাস সময় ধরে চলা অনিশ্চয়তা, দায়িত্বহীনতা এবং বারবার দপ্তরে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অবহেলা করা হয়েছে। তিনবার আবেদন জমা দেওয়া সত্ত্বেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। ফলস্বরূপ, অসুস্থতার সময় সে যথাযথ চিকিৎসা সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হয়, অথচ প্রশাসন তখনও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ব্যর্থ থাকে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন। দাবিগুলো হলো-
১. জিমির আবেদনের বিষয়ে প্রশাসনের অবহেলার দায় স্বীকার করতে হবে ও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে (গ্রাউন্ড ফ্লোরে) সকল শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেনো না হয় তার জন্য অঙ্গীকারপত্র স্বাক্ষর ও প্রকাশ করতে হবে।
২. উপাচার্যের কর্মদিবসগুলোতে নির্ধারিত সময়ে নিজ দপ্তরে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অনুপস্থিত থাকলে একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
৩. আর্থিক সহায়তাবিষয়ক আবেদন ৩ কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে গৃহীত হলে কিংবা বাতিল হলে তা স্পষ্টভাবে জানাতে হবে এবং এই কাজের জন্য একজন নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
৪. আর্থিক সহায়তা তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ওয়েবসাইটে এর হিসাব প্রকাশ করতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীরা যাতে উপাচার্যের সাথে কোন জরুরি বিষয় দেখা করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার না হয় এবং শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সকল যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করার ঘোষণা দেন তারা।
মন্তব্য করুন