বাঙলা কলেজ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫, ০৩:৪৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আমি যেন বার বার ফিরে আসতে পারি আপনাদের হৃদয়ে’

অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা। ছবি : সংগৃহীত
অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা। ছবি : সংগৃহীত

সরকারি বাঙলা কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাবিনা সুলতানা আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন। দীর্ঘ ৩১ বছর ৫ মাস নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও ভালোবাসার সঙ্গে শিক্ষকতা করে অবসরে গেছেন তিনি। এই দীর্ঘ পথচলায় ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য স্মৃতি, ভালোবাসা, সাফল্য এবং অসংখ্য প্রিয় মুখ।

বৃহস্পতিবার (২২মে) কলেজের অডিটোরিয়ামে অবসরগ্রহণ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় এক হৃদয়স্পর্শী বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। তার বিদায় যেন এক প্রজন্ম গড়ার ইতিহাসের গর্বিত ইতি টানার মুহূর্ত।

কুমিল্লা শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা অধ্যাপক সাবিহা সুলতানার শিক্ষকতা জীবনের শুরু ১৯৯৩ সালে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে। সেখানে এক দশক কাটিয়ে তিনি ইডেন কলেজে প্রায় পাঁচ বছর এবং ধামরাই সরকারি কলেজে এক বছর দুই মাস দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে তিনি শিক্ষাদান ছাড়াও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।

২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি সরকারি বাঙলা কলেজে যোগ দেন এবং এখানেই কাটান তার শিক্ষকতা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক প্রতিনিধি, স্পোর্টস কমিটির সদস্য এবং সাহিত্য সাময়িকী ম্যাগাজিনের সঙ্গে যুক্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই মঞ্চনাটক ও বিতর্কে যুক্ত থাকা অধ্যাপক সাবিহা শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিয়েছেন বিতর্ক, নাটক, উপস্থাপনা ও সৃজনশীল কাজের প্রতি। শুধু একাডেমিক পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি শিক্ষার্থীদের মনন ও নৈতিক বিকাশেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

তাঁর একমাত্র ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্কোয়াড লিডার, বড় মেয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন এবং ছোট মেয়ে ভর্তি হতে যাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার স্বামী একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। পেশাগত ও পারিবারিক জীবনে তার এ সাফল্য একটি পরিপূর্ণ রূপ দিয়েছে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সাবিহা সুলতানা আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, জীবনের তিনটি বড় প্রাপ্তি- সুস্থতা, সম্মান ও অর্জন। আমি তা পেয়েছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আমাকে দোয়ায় ও প্রার্থনায় রাখবেন। ভালোবাসার মধ্যেই যেন আমি ফিরে ফিরে আসতে পারি আপনাদের হৃদয়ে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা অধ্যাপক সাবিহার প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন। কেউ কেউ স্মৃতিচারণ করেন তার পাঠদান, সাহচর্য এবং উৎসাহের কথা।

অধ্যাপক সাবিহা সুলতানার বিদায় যেমন এক যুগের সমাপ্তি, তেমনি তার জীবনদর্শন হয়ে থাকবে শিক্ষাজগতে চিরকালীন এক আলোকবর্তিকা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘দেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নাই’

মধ্যরাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের পোস্ট

গাজা সমর্থন / তিন শক্তিশালী নেতার ওপর চটলেন নেতানিয়াহু

চিকিৎসক সংকটে ৩ মাস অস্ত্রোপচার বন্ধ

ছয় মাসে ৩২০০ বার যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল

২৩ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

এসব কি জুলাই স্পিরিটের পরিপন্থি নয়?

ইরানের বিরুদ্ধে তেলের ট্যাংকার ছিনতাইয়ের অভিযোগ

ইসরায়েলের হুমকিতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করল ইরান

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১০

২৩ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১১

পরিবেশ রক্ষায় রাষ্ট্রনায়ক জিয়ার পদক্ষেপ ছিল যুগান্তকারী : মিফতাহ সিদ্দিকী

১২

স্বাস্থ্য পরামর্শ / রক্তদাতার যত্ন: সজীব শরীর, সচেতন জীবন

১৩

‘আমি যেন বার বার ফিরে আসতে পারি আপনাদের হৃদয়ে’

১৪

‘টাঙ্গুয়ার হাওরে টুরিস্ট পুলিশের তথ্যসেবা কেন্দ্র করা হবে’

১৫

বিয়ের ৫ বছর পর একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম

১৬

চবিসাসের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক কালবেলার জাহিদুল

১৭

প্রশিক্ষণার্থী নারীকে অপদস্থের পর ক্ষমা চাইলেন সেই কৃষি কর্মকর্তা

১৮

জাবি শিক্ষার্থীদের তথ্য ফাঁস; নেপথ্যে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক

১৯

‘ফটোগ্রাফার রাফিদের স্মরণে ফটোগ্রাফি কনটেস্ট আয়োজন করা হবে’

২০
X