বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। অন্যদিকে আরেক অংশ হল ছাড়ার ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
আজ সকাল ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে দেখা যায় থমথমে পরিস্থিতি। পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ ফটকে।
জুলাই ৩৬ হল ও বেগম রোকেয়া হলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, নারী শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। ব্যাগ ও বইপত্র নিয়ে ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। নারী শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল রোববার রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতরা যেভাবে হামলা করেছে, তা ন্যক্কারজনক। হল না ছাড়লে সমস্যা হতে পারে এবং পরিবার থেকে চাপ থাকায় তারা হল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
অনেকে নারী শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, মামারা এসে চাপ দিচ্ছেন, রুম সিলগালা করছে, আবার পানি, বিদ্যুৎ লাইন অফ করে দিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্ররা বলেন, গত বছর জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে গুজব ছড়িয়ে, ভয়-ভীতি দেখিয়ে রাতের নোটিশে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হয়। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এই ক্যাম্পাসে নব্য স্বৈরাচারদের আবির্ভাব হয়েছে। যার কারণে হুট করে এভাবে রাতের নোটিশে হল ছাড়তে বলা হয়েছে। কিছু হলের মেয়েরা এবং প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছেন। আমরা হল ছাড়ব না।
এর আগে, রোববার (৩১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় চার দফা দাবি উত্থাপন করেন তারা। দাবিগুলো হলো—একক ডিগ্রি, অর্থাৎ কেবল কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু রাখতে হবে; বহিরাগতদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করায় সম্পূর্ণ প্রক্টোরিয়াল বডিকে পদত্যাগ করতে হবে; বহিরাগত দ্বারা ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ গ্রন্থাগার ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করার ঘটনায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে; এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না এই নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে, যেসব শিক্ষক এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
উল্লেখ্য, সমন্বিত ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান একদল ব্যক্তি। এতে সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাস। উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে রাতেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়।
মন্তব্য করুন