কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পান না শিক্ষার্থীরা। গত দেড় বছরে মাত্র দুটো মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করলেও সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়নি। শ্রেণি প্রতিনিধি ও ছাত্র উপদেষ্টাসহ মোট ১২০ জনকে সেখানে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হলেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার অনিকের আত্মহত্যা পর শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি উঠে আসে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক একজন ডাক্তার থাকলেও সেবা নিতে আসেন না শিক্ষার্থী। এমন তথ্য জানিয়েছেন মেডিকেল সেন্টারের মনোবিদ ডা. মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন ভুঁইয়া নিজেই।
ছাত্র পরামর্শক দপ্তরের সূত্র জানা যায়, পহেলা নভেম্বর ২০২১ থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র পরামর্শক ড. হাবিবুর রহমান এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য দুইবার মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। একটি এনজিও মাধ্যমে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। তবে এটি পর্যাপ্ত নয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা অনেক সময় ডিপ্রেশন, রেজাল্টের চাপ, ফ্যামিলি সমস্যাসহ নানান রকমের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। কিন্তু এই ধরনের সমস্যা তারা কারও সঙ্গে শেয়ার করতে চায় না। তারা মনে করে এসব বিষয় শেয়ার করলে তারা এগুলো নিয়ে শেয়ার করলে হাসাহাসি করবে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় বা ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে যদি কোন মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করা হয় এবং সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে এই প্রবণতা কমবে বলে আশা করা যায়।
লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা এইচ এম খালিদ হোসাইন ভূইয়া বলেন, আমরা কোন সেমিনার করি নাই। তবে প্রত্যেক ব্যাচের জন্য আলাদা শিক্ষক নিযুক্ত করা আছে।
তিনি আরও বলেন, একটা সেমিনার করতে অনেক কিছু দেখতে হয়। বাজেট, রিসোর্স পারসন, জায়গা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যে নির্দেশনা আসে সে অনুযায়ী কাজ করি।
মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত মনিটরিং করার চেষ্টা করি। শিক্ষার্থীদের গতিবিধি শনাক্ত করে তারপর তার সঙ্গে কথা বলা হয়।
ডিপার্টমেন্ট থেকে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো নেওয়া হয় নাই। তবে আমি শিগগিরই চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে বসে প্রথম বর্ষ ও শেষ বর্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করব।
ছাত্র পরামর্শক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোন ডিপার্টমেন্ট দপ্তরে আবেদন করে নাই। যদি আবেদন করে তাহলে দপ্তর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বিষয়টি নিয়ে আমি উপাচার্য স্যারের সঙ্গে বসব।
মন্তব্য করুন