প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, প্রাথমিকের বেসরকারি শিক্ষায় ফি কেমন নেওয়া যেতে পারে সে ব্যাপারে নিয়ম হওয়া উচিত। তবে এনিয়ে আমাদের (সরকার) কোন নীতিমালা নেই।
শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে রাজশাহী প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) অডিটোরিয়ামে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন।
অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়ার বিষয়ে অবশ্যই একটি নীতিমালা হওয়া উচিত যাতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইচ্ছেমতো ফি নিতে না পারে। বিশেষ করে তাদের পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি কেমন হবে তা-ও সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন ও বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করেছেন। ফলে প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু আমাদের দেশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা আছে। আগে এগুলোর মাত্রা খুব কম ছিল, এখন এটি বেড়েছে। কিন্তু সরকারের এমন নীতি নেই যে বেসরকারিভাবে কেউ এটি করতে পারবে না। যদিও প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব সরকারের তবে কেউ বেসরকারি চালালে এটার কোনো নিরোধকও নেই। ফলে ধরে নেওয়া যায় এটি চলবেই। এ বিষয়গুলো অবশ্যই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হতে হবে। তারা কোন কারিকুলাম ফলো করবে, কী পড়াবে এটি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের একটি নীতিমালা আছে। এর মাধ্যমে তারা রেজিষ্ট্রেশন নেবে এবং কি পড়াবে সেটি আমরা নির্ধারণ করে দেব। তবে এখন পর্যন্ত সবাই রেজিষ্ট্রেশন নেয়নি। আমরা চাই সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত করা এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীনভুক্ত করা।
এর আগে মতবিনিময় সভায় বক্তারা কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোকে নীতিমালার মধ্যে আনার বিষয়ে পরামর্শ দেন। ইনক্লুসিভ এডুকেশনের বিষয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের নিজেদের ভাষায় বই পড়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়, শিক্ষকদের টিচার্স গাইড অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা ব্যয় বৃদ্ধি, উপবৃত্তির টাকা প্রদান সহজ করা, দক্ষতা বৃদ্ধিতে বেশি বেশি প্রশিক্ষণ, আঞ্চলিক ছুটি, পরীক্ষার ফি, বৃত্তি ও সমাপনী পরীক্ষা নির্দেশনা।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর শামসুজ্জামান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার একেএম আনোয়ার হোসেন। সভায় বিভিন্ন প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, পিটিআই ও উপজেলা সহকারী ইন্সট্রাক্টর, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা অংশ নেন।
মন্তব্য করুন