দাখিল পরীক্ষায় অনন্য রেকর্ড করেছে যশোরের জাফরিয়া জীবন্ত কোরআন বহুমুখী আদর্শ মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানটি থেকে এবার ১৬ জন হাফেজসহ ১৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফল বিশ্লেষণে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬ জন কোরআনের হাফেজ রয়েছেন। এ ছাড়া দুজন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছে। সবমিলিয়ে তাদের মধ্যে ১৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আবু ওমায়েরের বাবা বাকিবিল্লাহ বলেন, শিক্ষর্থীদের মেধা আর শিক্ষকদের পরিচর্যার মাধ্যমে এমন ফলাফল হয়েছে। এজন্য আমি সত্যি গর্বিত। একইসঙ্গে দারুণ রেজাল্টের পাশাপাশি সন্তানেরা হাফেজ হতে পেরেছে। এটি আনন্দকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি প্রতিষ্ঠানের উত্তোরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ রায়হান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ আর নিয়মিত পরীক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে এই ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমরা গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে পড়াশোনার ওপর জোর দিয়ে থাকি। ফলে কোনো বাড়তি চাপ ছাড়া শিক্ষার্থীরা রুটিন মাফিক জীবনযাপনের মাধ্যমে ভালো ফলাফল অর্জন করেছে।
জাফরীয়া জীবন্ত কোরআন বহুমুখী আদর্শ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইলিয়াস হুসাইন বলেন, মানুষের চেষ্টা আর আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোনো লক্ষে পৌঁছানো সম্ভব। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, হাফেজি এবং দাখিল পড়াশোনা একসঙ্গে করতে শিক্ষার্থীদের কোনো বাড়তি চাপ নিতে হয় না। আমরা নির্ধারিত রুটিন আর পরিকল্পিত জীবনযাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একইসঙ্গে হাফেজ এবং দাখিল পরীক্ষার উপযোগী করে তুলছি। শিক্ষার্থীরা এখান থেকে পাস করে বিভিন্ন জায়গায় তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখছে। দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও তারা পড়াশোনা করছে।
এর আগে গত বছর ১৩ জন দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তাদের সবাই জিপিএ-৫ পান। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের সাতজন এবং মানবিক বিভাগের ছয়জন শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক বিভাগের তিনজন এবং বিজ্ঞান বিভাগের পাঁচজন গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, জাফরিয়া জীবন্ত কোরআন বহুমুখী আদর্শ মাদ্রাসা ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এটির ক্যাম্পাস যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দত্তরাস্তা বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। প্রতিষ্ঠানটিতে থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ মদিনা, তুরস্ক ও ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছে। ছয় বছরে অর্থসহ হাফেজে কোরআন ও দাখিল পাসের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে।
মন্তব্য করুন