কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫, ১১:১৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

খোলা আগুনে রান্নার ধোঁয়ায় বিপদে কোটি কোটি মানুষ

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

এখনো খোলা আগুন বা ক্ষতিকর জ্বালানিতে রান্না করতে বাধ্য কোটি কোটি মানুষ। এটি শুধু স্বাস্থ্য নয়, পরিবেশের জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) জানিয়েছে, এই সমস্যার সহজ সমাধান থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের এক বিশাল জনগোষ্ঠী এখনো এই ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে।

আইইএ-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় দুইশো কোটি মানুষ এখনো কাঠ, কয়লা, কৃষিজ বর্জ্য বা গোবরের মতো জ্বালানি ব্যবহার করে রান্না করে। আফ্রিকায় এই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, শুধু আফ্রিকাতেই ঘরের ভেতরের বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে প্রতি বছর প্রায় ৮ লাখ ১৫ হাজার মানুষ মারা যায়।

আইইএ প্রধান ফাতিহ বিরোল জানান, আফ্রিকায় প্রতি পাঁচটি পরিবারের মধ্যে চারটি এখনো খোলা আগুন বা কাঠ-জ্বালানি ব্যবহার করে রান্না করে। এতে নারীদের ও শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি মূল্যবান সময়ও অপচয় হচ্ছে।

এ ধরনের রান্না শুধু শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় না, একইসঙ্গে বন ধ্বংস ও কার্বন নিঃসরণ বাড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের গতিও ত্বরান্বিত করছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রান্নার ধোঁয়া থেকে যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, তা বৈশ্বিক বিমান চলাচল খাতের সমান।

তবে আইইএ বলছে, এই সংকট সমাধান করা একেবারেই সম্ভব এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচেই। সংস্থাটির মতে, বছরে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগেই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব, যা বৈশ্বিক জ্বালানি বিনিয়োগের মাত্র দশমিক ১ শতাংশ।

২০২৪ সালে প্যারিসে আয়োজিত এক সম্মেলনে ১২টি আফ্রিকান দেশ ও একাধিক বেসরকারি খাত মিলিয়ে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দেয়। এরইমধ্যে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার বিতরণ করা হয়েছে। এর আওতায় মালাউয়িতে একটি আধুনিক চুলা উৎপাদন কারখানা এবং উগান্ডা ও আইভরি কোস্টে সাশ্রয়ী স্টোভ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।

আইইএ বলছে, বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য গ্যাস এবং এলপিজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও এলপিজি একটি জীবাশ্ম জ্বালানি, তবে গাছ কাটার ফলে কার্বন সিংক ধ্বংসের চেয়ে এটি অনেক নিরাপদ বিকল্প।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে যদি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাহলে আফ্রিকায় প্রায় ৪৭ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু প্রতিরোধ করা যাবে এবং প্রতিবছর ৫৪ কোটি টন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো সম্ভব হবে—যা বৈশ্বিক এভিয়েশন খাতের বার্ষিক নিঃসরণের সমান।

তথ্যসূত্র : ডন, এএফপি

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিয়েতে হুজুরকে দাওয়াত না দেওয়ায় সংঘর্ষে আহত ১১

‘মোনালিসা’র চোখ ফাঁকি দিয়ে অভিনব চুরি, বিশ্বজুড়ে তোলপাড়

শাহজালালের কার্গোতে আগুনে ক্ষতি কত, জানাল বিজিএমইএ

লঘুচাপ-নিম্নচাপ নিয়ে নতুন বার্তা আবহাওয়া অফিসের

শরীয়তপুরে কালবেলার ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে কালবেলার ৩য় বর্ষপূর্তি উদযাপন

আ.লীগ আমলে একটাই খেলা হয়েছে, অস্ত্রের খেলা : দুলু

দেশের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে ইরানে আরও একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সুস্থ থাকতে কোন বয়সে কত ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন, জেনে নিন

ফেসবুকে দিয়েছিলেন বিনামূল্যে লাশ পরিবহনের খবর, তিনিই এখন যাত্রী!

১০

দুর্নীতি ও বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে : ইসলামী সমাজ

১১

মোমের আলোয় প্রয়াতদের স্মরণ করেন স্বজনরা

১২

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে সংঘর্ষ, অস্ত্র প্রদর্শন

১৩

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণ এখন সর্বোচ্চ দামে

১৪

খালেদা জিয়ার ত্যাগ ও অবদানকে মূল্যায়ন করবে জনগণ : রহমাতুল্লাহ

১৫

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা : ফরম পূরণের সময় বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি

১৬

শাহজালাল বিমানবন্দরে পণ্য রাখার নতুন স্থান নির্ধারণ

১৭

ভিসা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ মিলছে ৪২ দেশের নাগরিকদের

১৮

বাগেরহাটে কলেজ ছাত্রদল সভাপতির ওপর হামলা

১৯

ঘাস চিবিয়ে মাঠ ‘অনুভব’ করতেন রোনালদো!

২০
X