দিন শেষে ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে আমরা সবাই ছুটে যাই নিজের বিছানায়। কিন্তু সেই প্রিয় বিছানাটাই যদি পরিষ্কার না থাকে? প্রতিদিন ঘাম, ধুলাবালি, ত্বকের মৃত কোষ—এসব জমে জমে বিছানার চাদরে তৈরি হয় অদৃশ্য এক জগৎ, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
অনেকেই হয়তো এক চাদর দিয়ে টানা এক মাস পার করে দেন, কেউ আবার সপ্তাহ না যেতেই ধুয়ে ফেলেন। কিন্তু আদতে কী নিয়ম? কতদিন পর পর ধোয়া উচিত বিছানার চাদর?
এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা—আর সেই উত্তর জেনে আপনি হয়তো আজই চাদর ধুতে চাইবেন!
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
সাধারণভাবে প্রতি ১ থেকে ২ সপ্তাহে একবার বিছানার চাদর ধোয়া উচিত। তবে যদি আপনার অ্যালার্জি থাকে, আপনি অতিরিক্ত ঘামান বা ঘরে পোষা প্রাণী থাকে তাহলে সপ্তাহে একবার ধোয়া ভালো।
কেন নিয়মিত চাদর ধোয়া জরুরি?
- প্রতিদিন আমাদের শরীর থেকে ঘাম, ত্বকের মৃত কোষ, ধুলাবালি ও ব্যাকটেরিয়া বিছানায় জমা হয়।
- এগুলো জমে থাকলে হতে পারে ব্রণ, অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট এমনকি ত্বকের নানা সমস্যা।
- ফলে, স্বাস্থ্যকর ও আরামদায়ক ঘুমের জন্য পরিষ্কার চাদর অপরিহার্য।
চাদর ধোয়ার সময় যেসব ভুল এড়িয়ে চলা উচিত
ঠান্ডা পানিতে ধোয়া : অনেকেই ঠান্ডা পানিতে চাদর ধুতে অভ্যস্ত, কিন্তু এতে জীবাণু ঠিকমতো দূর হয় না।
একসঙ্গে অনেকগুলো চাদর ধোয়া : অনেকেই সময় বাঁচাতে একসঙ্গে ২-৩টা চাদর ওয়াশিং মেশিনে দিয়ে দেন, এতে করে কোনোটাই ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না।
অতিরিক্ত ডিটারজেন্ট বা সফটনার ব্যবহার : বেশি ডিটারজেন্ট বা ফেব্রিক সফটনার ব্যবহার করলে চাদরের শোষণক্ষমতা কমে যায় এবং দ্রুত ময়লা ধরে।
বিছানার চাদরের যত্ন নেওয়ার কিছু কার্যকর টিপস
গরম পানিতে ধুয়ে নিন : গরম পানি চাদরের জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে।
সঠিক পরিমাণ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন : কম বা বেশি নয়, পরিমাণমতো ব্যবহার করলেই চাদর পরিষ্কার থাকবে ও দীর্ঘদিন টিকবে।
ভালোভাবে শুকিয়ে নিন : চাদর ভালোভাবে না শুকালে ছত্রাক বা দুর্গন্ধ তৈরি হতে পারে। রোদে শুকানো সবচেয়ে ভালো।
চাদরের ট্যাগ দেখে ধোয়ার নিয়ম মেনে চলুন : সব চাদর এক রকম নয়। তাই যেভাবে পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে, সেটাই অনুসরণ করুন।
চাদর ধোয়া একটু কষ্টকর বা সময়সাপেক্ষ মনে হলেও, এটি নিয়মিত করলে আপনার ঘুম হবে আরও আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর। পরিষ্কার চাদর মানে শুধু পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং একটি ভালো ঘুম ও সুস্থ জীবনযাপনের এক ধাপ।
মনে রাখবেন, নিয়মিত পরিষ্কার চাদর মানে– কম অ্যালার্জি, কম ব্যাকটেরিয়া, আর বেশি শান্তিময় ঘুম।
মন্তব্য করুন