চাকরির ইন্টারভিউ কথাটি শুনলেই অনেকের বুক ঢিপঢিপ করা শুরু করে। এটা যেন কাজের জন্য ‘স্পিড ডেটিং’। খুব অল্প সময়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়, আর প্রথম ইম্প্রেশনটাই হয়ে যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
লিংকডইন লার্নিংয়ের কোর্স ‘How to Rock an Interview’-এ ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ পাম স্কিলিংস বলেন, ইন্টারভিউ মানে এক ধরনের পারফরম্যান্স। আপনি নিজেই এর নায়ক বা নায়িকা।
আপনি যদি নতুন চাকরির সন্ধানে থাকেন, তাহলে লিংকডইন লার্নিংয়ের কোর্সের এই ৬টি টিপস জেনে নিন। এগুলো আপনাকে পরবর্তী ইন্টারভিউয়ে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে এবং হয়তো চাকরিটাও এনে দেবে আপনার পছন্দের!
১. প্রথম ইম্প্রেশনটাই হোক স্মার্ট
আপনি নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন- এই প্রশ্নটা ইন্টারভিউয়ের শুরুতেই প্রায় সবখানেই করা হয়। কিন্তু কোথা থেকে শুরু করবেন?
পুরো সিভি একটানা বলে যাওয়ার দরকার নেই। বরং সংক্ষেপে বলুন আপনি কেন এই চাকরির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। চোখে চোখ রাখুন, আত্মবিশ্বাস দেখান এবং ঠিক করুন কোন দিকগুলো তুলে ধরবেন।
২. নিজের শক্তি তুলে ধরতে লজ্জা নয়
ইন্টারভিউয়ে নিজের ভালো দিকগুলো বলা মানেই অহংকার নয়। বরং, এটিই আপনার শক্তি জানানোর সেরা উপায় এবং সময়। নিজেকে প্রস্তুত করুন। ৩টি কারণ ব্যাখ্যা করুন কেন আপনি এই চাকরির জন্য পারফেক্ট।
এই জবাবগুলো আগেই একটু চর্চা করে রাখুন তাহলে ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে তখন আর জড়তা আসবে না।
৩. স্ক্রিপ্ট নয়, পয়েন্টে কথা বলুন
ইন্টারভিউতে আপনার কথায় যেন স্বতঃস্ফূর্ততা থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। পুরোপুরি মুখস্থ কথা বলতে গেলে সেটা কৃত্রিম মনে হতে পারে। তাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর জন্য কয়েকটি বুলেট পয়েন্ট তৈরি করে রাখুন। এমন পয়েন্ট রাখবেন যা আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার মূল দিকগুলো তুলে ধরে।
যেমন, আপনার সিভিতে যদি কোনো গ্যাপ থাকে, তা নিয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে। ভয়ের কিছু নেই। আগেই প্র্যাকটিস করে রাখুন কীভাবে সে প্রশ্নের উত্তর দেবেন। এতে আপনি নিজের কথার নিয়ন্ত্রণে থাকবেন।
৪. চাকরি নিয়ে আপনার আগ্রহ দেখান
কোম্পানি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি, নিজে কেন এই চাকরিটিতে আগ্রহী তা যেন আপনার কথায় স্পষ্ট হয়।
কিছু প্রশ্নের জবাব আগে থেকেই ভেবে রাখুন। যেমন-
- আমি এই চাকরির জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত কেন? - আমাকে নিলে আমি কেন সফল হব? - আমার ক্যারিয়ার লক্ষ্য ও আগ্রহের সঙ্গে এ কাজটা কতটা মেলে?
নিয়োগদাতারা এমন কাউকে চান, যিনি শুধু কাজ করবেন না বরং তা আনন্দ নিয়ে করবেন।
৫. ছোট আর অর্থবহ গল্প বলুন
যখন কোনো প্রকল্পের কথা বলবেন, সেটাকে একটা গল্পের মতো বলুন। কিন্তু সংক্ষিপ্তভাবে। কিছু ব্যাকগ্রাউন্ড দিন। নিজের কথা বলুন। মনে রাখবেন, গল্পটি দুই মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে ‘আমি’ বলুন, ‘আমরা’ নয়। যেন কথার মধ্যে আলোচনার সুযোগ থাকে।
৬. ইন্টারভিউয়ের শেষটাও হোক ইতিবাচক
অনেকেই ইন্টারভিউ শেষে জিজ্ঞেস করেন, ‘আমার বিষয়ে কোনো সংশয় আছে কি?’ কিন্তু, এটা ভালো কোনো ধারণা তুলে ধরে না আপনার ব্যাপারে।
বরং জিজ্ঞেস করুন- এই পজিশনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণগুলো কী বলে আপনি মনে করেন? এতে আপনি আরেকবার সুযোগ পাবেন নিজের দক্ষতা তুলে ধরার এবং আপনার শেষ ইম্প্রেশনটা হবে পজিটিভ ও আত্মবিশ্বাসী।
চাকরির ইন্টারভিউ মানেই ভয় পাওয়ার বিষয় নয়। বরং, সঠিক প্রস্তুতি থাকলে এটিই হতে পারে আপনার ক্যারিয়ারে নতুন এক সুযোগের দরজা। মনে রাখুন- আপনি নিজেই আপনার গল্পের নায়ক!
মন্তব্য করুন