অফিসে কাজের ফাঁকে কিংবা ক্লাসরুমে, আবার বন্ধুদের আড্ডাতেও কিছু মানুষকে সবার চোখে পড়ে যায় আলাদাভাবে। তারা বেশি কথা বলেন না, বড়াইও করেন না, তবু আশপাশের সবাই যেন তাদের কাছেই টেনে আসে। কেউ তাদের সঙ্গে মনের কথা শেয়ার করতে চায়, কেউ আবার প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে দ্বিধা করে না। মনে হয়, তাদের ভেতরে আছে এক ধরনের অদৃশ্য টান।
আসলে এরা কোনো জাদুকর নন। বরং প্রতিদিন ছোট ছোট কিছু অভ্যাসের মধ্য দিয়ে নিজের উপস্থিতিকে এমনভাবে প্রকাশ করেন, যা নীরবেই তাদের সবার প্রিয় করে তোলে।
কী সেই অভ্যাসগুলো? জেনে নিন ছয়টি সহজ অভ্যাস, যা চাইলে আপনাকেও করে তুলতে পারে সবার ভরসা আর পছন্দের মানুষ।
১. অন্যের ওপর দোষ না চাপিয়ে নিচের ভুল স্বীকার করা
মানুষ মাত্রই ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষের ব্যক্তিত্বে পার্থক্য তৈরি করে সেই ভুলে তার প্রতিক্রিয়া। ব্যক্তিত্ববান ব্যক্তি ভুল করে অজুহাত তৈরি করেন না, অন্যের ঘাড়ে দোষও দেন না। তারা সরাসরি দায়িত্ব নেন।
ভুল স্বীকার করা বিশ্বাস তৈরি করে। আবার এটি সমস্যা দ্রুত সমাধানের পথও তৈরি করে। ভুল স্বীকার করার সাহস তাদের সততার খ্যাতি তৈরি করে।
২. অন্যের সময়ের গুরুত্ব দেওয়া
সময়কে সম্মান দেওয়া মানুষকে সহজে অন্যের কাছে প্রিয় করে তোলে। যখন কেউ সময়মতো আসে, অন্যের ব্যস্ত সময়সূচিকে মূল্যায়ন করে এবং সময় নষ্ট করে না, তখন তার দায়িত্বশীলতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং অন্যের প্রতি যত্নশীল হওয়ার মতো গুণগুলো প্রকাশ পায়।
এমন আচরণ স্বাভাবিকভাবেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানুষ তাদের সহজে বিশ্বাস করে এবং আড্ডা বা সহযোগিতায় আনন্দ পায়। সংক্ষেপে, অন্যের সময়কে গুরুত্ব দেওয়া হলো প্রিয় হওয়ার একটি অদৃশ্য, কিন্তু শক্তিশালী পদ্ধতি।
৩. কথা দিয়ে কথা রাখা
বড় বড় কথা বা লোক দেখানো আচরণের মাধ্যমে বিশ্বাস তৈরি হয় না। বিশ্বাস তৈরি হয় প্রতিশ্রুতি রক্ষার মাধ্যমে। হোক তা একটা ই-মেইল পাঠানো, কোনো কাজ সম্পন্ন করা বা শুধু উপস্থিত থাকা। ছোট ছোট প্রতিশ্রুতি রক্ষা করাও অন্যের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়। বিশ্বে সেরা সফল ব্যক্তিরা তাদের কথাকে চুক্তি হিসেবে দেখেন।
নিজেকে অন্যের চোখে সম্মান ও ভরসাযোগ্য মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করার এটি একটি শক্তিশালী উপায়।
৪. সাফল্যের কৃতিত্ব ভাগাভাগি করা
যে কোনো কাজের সাফল্যের পেছনে সাধারণত একটি দলগত প্রয়াস থাকে। বিশেষ করে পেশাগত কাজে। প্রকৃতিকভাবে যাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণ আছে, তারা সাধারণত দলের অন্যদের সঙ্গে সাফল্য ও কৃতিত্ব ভাগাভাগি করে নেন। একটি ছোট্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অন্যের চোখে তার সম্মান বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
৫. স্বাস্থ্যকর সীমারেখা ঠিক করা
স্বাস্থ্যকর সীমারেখা একজন মানুষকে অন্যের কাছে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। কারণ যখন কেউ অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি না নিয়ে স্পষ্টভাবে ‘না’ বলতে পারে বা সীমা নির্ধারণ করে, তখন মানুষ তাদের প্রতি বিশ্বাস পায় এবং সম্মান করে। এই ধরনের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সততা মানুষকে সহানুভূতিশীল ও নির্ভরযোগ্য বানায়, যার ফলে তারা সহজে সবার কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে।
সূত্র : টাইমস আব ইন্ডিয়া ও ভেরিওয়েল মাইন্ড
মন্তব্য করুন